মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারগুলোতে স্টারলিংক সেবা বন্ধ করলো স্পেসএক্স
-1761147971.jpg)
ছবিঃ সংগৃহীত।
ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স জানিয়েছে, মিয়ানমারের স্ক্যাম কেন্দ্রগুলোতে ব্যবহৃত ২ হাজার ৫০০ টির বেশি স্টারলিংক ডিভাইসে স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তারা অবৈধ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়ার পর এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে স্পেসএক্সের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের প্রধান লরেন ড্রেয়ার বলেন, মিয়ানমারে আমরা সক্রিয় থাকা ২ হাজার ৫০০-টির বেশি স্টারলিংক কিট শনাক্ত ও বন্ধ করেছি। এগুলো সন্দেহভাজন স্ক্যাম সেন্টারগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, স্টারলিংক প্রযুক্তি যেন মানবকল্যাণে ব্যবহৃত হয় এবং অপরাধীরা যাতে এর অপব্যবহার করতে না পারে, এই বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মিয়ানমারের থাই সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ৩০টির বেশি স্ক্যাম সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে বলে ধারণা করা হয়। এসব শিবিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষকে চাকরির প্রলোভনে এনে আটকে রাখা হয় এবং তাদের দিয়ে অনলাইন প্রতারণা, প্রেমের ফাঁদ ও ভুয়া বিনিয়োগ প্রকল্পের মতো অপরাধমূলক কাজ করানো হয়। এসব কর্মকাণ্ড থেকে প্রতিবছর কয়েক দশক বিলিয়ন ডলার আয় হয় বলে ধারণা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর।
সোমবার মিয়ানমার সেনাবাহিনী কেকে পার্ক নামে একটি বৃহত্তম স্ক্যাম সেন্টারে অভিযান চালায়। এ সময় ২ হাজারের বেশি আটককর্মীকে মুক্ত করা হয় এবং অন্তত ৩০টি স্টারলিংক ডিভাইস জব্দ করা হয়। প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ওই সেন্টারের ছাদে অসংখ্য স্যাটেলাইট ডিশ স্থাপন করা ছিল।
বিবিসির প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, শত শত মানুষ হেঁটে শিবির ছাড়ছেন। তবে সীমান্তবর্তী এলাকায় আরও অন্তত ৩০টি স্ক্যাম সেন্টার এখনও সক্রিয় রয়েছে। এগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা এসব কেন্দ্রগুলোতে স্টারলিংক সেবা বন্ধ হয়েছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।
মানবাধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন যে, স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রযুক্তি এই ধরনের বিচ্ছিন্ন এলাকায় সক্রিয় অপরাধচক্রগুলোকে সহজে কাজ পরিচালনা করতে সাহায্য করছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বর্তমানে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে। আর এই প্রতারণা কেন্দ্রগুলো এখন তাদের যুদ্ধকালীন অর্থনীতির একটি বড় উৎসে পরিণত হয়েছে।
ড্রেয়ার বলেন, স্টারলিংকের লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী সংযোগ বাড়ানো, তবে সেই সঙ্গে এটি যেন বিশ্বাসযোগ্য ও নৈতিক ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, সেই নিশ্চয়তাও আমরা দেব।