‘তিয়ানগং’ মহাকাশ স্টেশনে যাত্রা শুরু করেছে চীনের সর্বকনিষ্ঠ নভোচারী ও ৪টি ইঁদুর
সংগ্রহীত ছবি
শুক্রবার উত্তর-পশ্চিম চীনের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে লং মার্চ-২এফ রকেটের মাধ্যমে চীনের শেনঝো-২১ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এতে চীনের নভোচারী দলের সর্বকনিষ্ঠ সদস্যসহ পুরো ক্রুরা অংশ নিয়েছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই খবর জানিয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
শেনঝৌ-২১ মিশন স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে (গ্রিনিচ মান সময় ১৫৪৪) উত্তর-পশ্চিম চীনের জিউকুয়ান স্যাটেলাইট লঞ্চ সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়।
২০২২ সালে নির্মান সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে এটি ছিল চীনা মহাকাশ স্টেশনে (হ্যাভেনলি প্যালেস) নভোচারী পাঠানোর সপ্তম মিশন। চীনের শেনঝো-২১ মহাকাশযানের মিশনে তিনজন নভোচারী ছয় মাসের জন্য মহাকাশে অবস্থান করছেন, যেখানে অভিজ্ঞ নভোচারীদের ধীরে ধীরে তরুণ সদস্যদের দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়। প্রথমবারের মতো মহাকাশ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন ৩৯ বছর বয়সী ঝাং হংঝাং এবং ৩২ বছর বয়সী উ ফেই, যিনি এখন পর্যন্ত মহাকাশে পাঠানো চীনের সর্বকনিষ্ঠ নভোচারী। তারা দুজনই ২০২০ সালে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত হন।
মহাকাশ স্টেশনে প্রথম ছোট প্রাণী
শেনঝো-২১ মিশনের নভোচারীরা শেনঝো-২০ ক্রুর কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তারা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে তিয়ানগং বা ‘হ্যাভেনলি প্যালে,’ নামের মহাকাশ স্টেশনে বসবাস ও কাজ করেছেন। শেনঝো-২০ দলের নভোচারীরা আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।
শেনঝো-২১ ক্রুর সঙ্গে আরো ছিল চারটি কালো ইঁদুর।
চীনা মহাকাশ স্টেশনে পাঠানো প্রথম ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী। এর মধ্যে দুটি পুরুষ এবং দুটি নারী ইঁদুর রয়েছে। তাদের নিয়ে চীনের প্রথম মহাকাশে কক্ষপথে পরীক্ষামূলক গবেষণা চালানো হবে।
বছরে দুইবার উৎক্ষেপণ এখন শেনঝো কর্মসূচির নিয়মিত অংশে পরিণত হয়েছে। গত এক বছরে এই কর্মসূচি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছুঁয়েছে।
যেমন ১৯৯০-এর দশকে জন্ম নেওয়া চীনা নভোচারীদের প্রথমবারের মতো মহাকাশে পাঠানো, বিশ্ব রেকর্ড স্থাপনকারী মহাকাশযাত্রা (স্পেসওয়াক) সম্পন্ন করা এবং আগামী বছর পাকিস্তান থেকে প্রথম বিদেশি নভোচারীকে তিয়ানগং স্টেশনে পাঠানোর পরিকল্পনা গ্রহণ।
চীনের এই দ্রুত অগ্রগতি ও সাফল্য ওয়াশিংটনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যেখানে এখন যুক্তরাষ্ট্র তাড়াহুড়ো করে আবারও একজন মার্কিন নভোচারীকে চীনের আগে চাঁদে পাঠানোর চেষ্টা করছে। এ ছাড়া, উভয় দেশই নতুন মহাকাশ সহযোগিতা কাঠামো গঠনে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ‘আর্টেমিস অ্যাকর্ডস’ চন্দ্র অনুসন্ধান কর্মসূচির মোকাবিলায় চীন ও রাশিয়া যৌথভাবে ‘ইন্টারন্যাশনাল লুনার রিসার্চ স্টেশন’ প্রকল্পে কাজ করছে।