মঙ্গল থেকে শব্দের রেকর্ডিং পাঠাল পারসেভেব়্যান্স

মঙ্গল থেকে শব্দের রেকর্ডিং পাঠাল পারসেভেব়্যান্স

রেকর্ড করা শব্দ থেকে মঙ্গলের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে আরও তথ্য আবিষ্কার করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা- ছবি: সংগৃহীত

পৃথিবীবাসীর জন্য আরও এক নতুন তথ্য পাঠাল নাসার রোভার পারসেভেব়্যান্স। রোভারে যে মাইক্রোফোন বাসানো রয়েছে তার সাহায্যে মঙ্গলের শব্দ রেকর্ড করে পাঠাল সে। ২ মার্চ সেই অডিও রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলে শিলার উপর লেজার রশ্মি ফেলার ফলে যে শব্দ উৎপন্ন হয় এটি ছিল সেই শব্দের প্রথম রেকর্ডিং।

জানা গেছে, বিজ্ঞানীরা লেজারের প্রভাবে এই রেকর্ড করা শব্দ থেকে মঙ্গলের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে আরও তথ্য আবিষ্কার করতে পারবেন বলে। নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই শব্দের তীব্রতার বিভিন্নতা টার্গেটের শারীরিক গঠন সম্পর্কে তথ্য দেয়। যেমন এটি কতোটা শক্ত বা আবহাওয়ার এর উপর কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে এই সব তথ্য এই শব্দ থেকে জানতে পারা যায়। এই লেজার রশ্মির ব্যবহার গবেষকদের ওই বস্তুতে অবস্থিত ধাতু সম্পর্কে জানতে পারেন। যেখানে রোভারের রোবটিক হাত পৌঁছয় না বা যেখানে রোভার সশরীরে উপস্থিত হতে পারে না সেখানে এই লেজার রশ্মিকে কাজে লাগানো হয়। যে পাথরের উপর লেজার রশ্মি ফেলে রেকর্ডিং করা হয়েছে সেটি প্রায় ১০ ফুট (৩ মিটার) দূরে ছিল।

৪ মার্চ মঙ্গলের মাটিতে গবেষণা চালায় নাসার রোভার পারসেভেব়্যান্স। সেই ছবি সে পাঠিয়েছে পৃথিবীতে। মঙ্গলের মাটিতে রোভারের চাকার দাগ দেখা গিয়েছে ছবিতে। মঙ্গলের মাটিতে প্রায় ৩৩ মিনিট ঘুরে বেড়ায় পারসেভেব়্যান্স। নাসার তরফে জানানো হয় মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এটি মাইলফলক। নাসা রোভার এখন মঙ্গলের যে জায়গায় রয়েছে তার নাম ‘অক্টাভিয়া ই বাটলার ল্যান্ডিং’। কল্পবিজ্ঞানের বিখ্যাত লেখক অক্টাভিয়া ই বাটলারের নাম অনুসারে এই জায়গার নামকরণ করা হয়েছে। নাসা এও জানায়, রোভার একবার যাতায়াত শুরু করার পর ৬৫৬ ফিট বা ২০০ মিটার পর্যন্ত এলাকা কভার করবে। আগামী ২ বছরের জন্য এই রোভারের পারফর্ম্যান্স নিয়ে নিশ্চিন্ত বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, মঙ্গলগ্রহে কয়েকশো কোটি বছর আগে বিশাল হ্রদ ছিল। সম্ভবত সেই হ্রদে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল বলেও অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। এবারের মঙ্গলাভিযানের প্রধান লক্ষ্যই হল লাল গ্রহে প্রাণের সন্ধান। নাসার তরফে জানানো হয়, রোভারটি মঙ্গলগ্রহের উপরে থাকা ব-দ্বীপের মত চেহারার একটি অংশের দুই কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবতরণ করেছে। আগামী দু বছর এখানেই পারসেভেব়্যান্স গবেষণা চালাবে। নাসার বিজ্ঞানীদের অনুমান, মঙ্গলগ্রহে পাথরের যে কোনও রকম অণুজীবের অস্তিত্ব সংরক্ষণের ক্ষমতা রয়েছে। ফলে অতীতে যদি মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব থেকেও থাকে, তাহলে এই পাথরের মধ্যে তার ইঙ্গিত মেলার আশা রয়েছে। -কোলকাতা২৪