সুখী দেশ: তালিকার শীর্ষে আবারো ফিনল্যান্ড, এগিয়েছে বাংলাদেশ

সুখী দেশ: তালিকার শীর্ষে আবারো ফিনল্যান্ড, এগিয়েছে বাংলাদেশ

সুখী দেশ: তালিকার শীর্ষে আবারো ফিনল্যান্ড, এগিয়েছে বাংলাদেশ

পর পর চার বছর বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের শীর্ষ অবস্থানে আসন গেড়ে আছে ফিনল্যান্ড। জাতিসংঘের সৌজন্যে ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট নামে এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থানও আগের চেয়ে কিছু ভাল হয়েছে।

২০১৮-২০২০ সাল পর্যন্ত বিশ্বের ১৪৯টি দেশে জরিপ চালিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডেনমার্ক রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। এরপরেই রয়েছে সুইজারল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস।বাংলাদেশ আছে তালিকার ১০১ নম্বরে। এর আগের জরিপে ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০৭তম। সে হিসেবে বাংলাদেশ র‍্যাংকিংয়ে ছয় ধাপ এগিয়েছে।

তবে মানুষ তার জীবনে সুখী কিনা সেটা নিয়ে যে গড় মূল্যায়ণ হয়েছে সেখানে বাংলাদেশ তার প্রাপ্ত স্কোর অনুযায়ী তালিকার ৬৮ নম্বরে স্থান পেয়েছে।যা ২০১৭-২০১৯ সালের স্কোরের চাইতে ৯ ধাপ এগিয়ে এসেছে।

অন্যদিকে আগের অবস্থান থেকে চার ধাপ পিছিয়েছে যুক্তরাজ্য। আগে তার অবস্থায় ১৩তে, থাকলেও ২০২০ সালের এই প্রতিবেদনে তা ১৭-তে দাঁড়িয়েছে।এছাড়া তালিকার ১৯তম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

হ্যাপিনেস র‍্যাংকিং-এ শীর্ষ ১০ এর তালিকায় থাকা একমাত্র নিউজিল্যান্ডই একমাত্র অ-ইউরোপীয় দেশ।অ্যানালেটিক রিসার্চ গ্যালাপ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এবারে নবমবারের মতো হ্যাপিনেস রিপোর্ট প্রকাশিত হল।

মূলত ১৪৯টি দেশের মানুষজনকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে তাদের সুখ পরিমাপ করা হয়েছে।সুখের পরিমাপক হিসেবে, দেশটির সামাজিক সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক উদারতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপি, গড় আয়ু এবং দুর্নীতির মাত্রা বিষয়গুলোকে সামনে রাখা হয়।

সেইসঙ্গে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবারের প্রতিবেদনে আলাদা প্রাধান্য পেয়েছে।তবে এবার সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারীতে মানুষের সার্বিক পরিস্থিতিকে।এসব মানদণ্ডে বিশ্বের সবচেয়ে অসুখী দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের নাম উঠে এসেছে। তার পরেই রয়েছে লেসোথো, বোতসোয়ানা, রুয়ান্ডা এবং জিম্বাবুয়ে।

মহামারির সম্ভাব্য নান প্রভাবের দিকে ইঙ্গিত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ১৪৯টি দেশের এক তৃতীয়াংশের মধ্যে "নেতিবাচক আবেগ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।"তবে, ২২টি দেশের পরিস্থিতি আগের তুলনায় ভাল হয়েছে।

আগের বছরের র‌্যাঙ্কিংয়ের চেয়ে এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশেরে অবস্থান বেশ ভালো। এরমধ্যে বাংলাদেশ যেমন আছে, তেমনি চীন ৯৪ তম থেকে ৮৪ তম স্থানে উঠে এসেছে। অর্থাৎ ১০ ধাপ এগিয়েছে।

আবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অসুখী দেশ হিসেবে আফগানিস্তানের পরেই ভারতের অবস্থান। ১৪৯টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১৩৯তম অবস্থানে।১২৯ তম স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, সামরিক অভ্যুত্থান ও গণ আন্দোলনের জোয়ারে ভাসা মিয়ানমার আছে তালিকার ১২৬-এ এবং ১০৫ তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান।

"আশ্চর্যের বিষয় হল এই জরিপে অংশ নেয়া প্রত্যেকেই তার নিজ জীবনে ভালো থাকা, খারাপ থাকার বিষয়টি মূল্যায়ন করলেও, তাদের গড় ভালো থাকা বা সুস্থ থাকার মাপকাঠিতে কোন হ্রাস হয়নি। জন হেলিওয়েল, এ কথা বলেছেন।এর একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে যে সাধারণ মানুষ হয়তো কোভিড -১৯ কে একটি সাধারণ রোগ হিসেবে মেনে নিয়েছে।

এই সময়ে বাইরে বের হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ার বিষয়টি প্রত্যেকে প্রভাবিত করেছে এবং এটি তাদের মধ্যে আরও সংহতি এবং সহানুভূতির বাড়িয়ে তুলেছে।

ফিনল্যান্ড "মহামারিকালীন জীবন ও জীবিকা রক্ষা সেইসঙ্গে পারস্পরিক আস্থার মানদণ্ডে সবচেয়ে উচ্চ অবস্থান অর্জন করেছে", প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে যে ৫৫ লাখ জনসংখ্যার নর্ডিক দেশটি মহামারিকালীন ইউরোপের সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর চাইতে অনেক বেশি ভালভাবে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।দেশটিতে এ পর্যন্ত ৭০ হাজার মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৮০৫ জন।

প্রতিবেদন অনুসারে, দশটি সুখী দেশ হল:

১. ফিনল্যান্ড

২. ডেনমার্ক

৩. সুইজারল্যান্ড

৪. আইসল্যান্ড

৫. নেদারল্যান্ডস

৬. নরওয়ে

৭. সুইডেন

৮. লুক্সেমবার্গ

৯. নিউজিল্যান্ড

১০. অস্ট্রিয়া

সূত্র : বিবিসি