ভারতে করোনায় রেকর্ড আক্রান্ত ও মৃত্যু

ভারতে করোনায় রেকর্ড আক্রান্ত ও মৃত্যু

প্রথমবারের মত ভারতে করোনায় মৃত্যু দেড় হাজারের ঘর ছাড়াল- সংগৃহীত ছবি

দিন যত যাচ্ছে ভারতে করোনায় আক্রান্তদের হার যে হারে বাড়ছে ঠিক তেমনি মৃত্যুও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনের পরিসংখ্যানে ভারতে করোনা আক্রান্তদের এবং মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড পরিমানে বাড়ছে। এ বার দৈনিক নতুন সংক্রমণ এবং মৃত্যু আগের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেল।

রবিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, সেই অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২ লক্ষ ৬১ হাজার ৫০০ জন। বৃহস্পতিবার থেকে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ২ লক্ষের উপরেই রয়েছে। কিন্তু গত দেড় বছরে এক দিনে এত জন মানুষের সংক্রমিত হওয়ার রেকর্ড নেই। সংক্রমণে এই রেকর্ড বৃদ্ধির জেরেই ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১ কোটি ৪৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ১০৯ হয়েছে।

অন্য দিকে, গত ৯ মার্চই ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃতের সংখ্যা কমে ৭৭-এ নেমে এসেছিল। কিন্তু তার পর দেড় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দৈনিক মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১ হাজার ৫০১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন জনবহুল দেশটিতে।

এমন পরিস্থিতিতে শনিবারই প্রতিষেধকের উৎপাদন বাড়িয়ে টিকাকরণে জোর দেওয়ার কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রতিষেধকের জোগানে ঘাটতি নিয়ে ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছে একাধিক রাজ্য। তার মধ্যেও প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ মিলিয়ে সেখানে ১২ কোটি ২৬ লক্ষ ২২ হাজার ৫৯০ জন নাগরিক কোভিড-১৯ প্রতিরোধী প্রতিষেধক পেয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতিষেধক পেয়েছেন ২৬ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৪৯ জন নাগরিক।

আগের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষাও বেড়েছে। প্রতি দিন যতগুলি নমুনা পরীক্ষা হয় এবং তার মধ্যে যতগুলির রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩৯৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়। এই মুহূর্তে দেশটিতে সংক্রমণের হার ৫.৫৫। বর্তমানে ভারতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১৮ লক্ষ ১ হাজার ৩১৬। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত দেশটিতে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ কোটি ২৮ লক্ষ ৯ হাজার ৬৪৩ জন রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪২৩ জন।

সংক্রমণের নিরিখে গোটা বিশ্বে এই মুহূর্তে আমেরিকার পরেই স্থান ভারতের। ব্রাজিল নেমে গিয়েছে তৃতীয় স্থানে। মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বতালিকায় চতুর্থ তালিকায় রয়েছে ভারত। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ও টিকাকরণ না বাড়ালে সংক্রমণ ঠেকানো অসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে বলে মত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু টিকাকরণের শ্লথ গতি, ওষুধ, অক্সিজেন এবং প্রতিষেধকে ঘাটতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে একাধিক রাজ্য। -আনন্দবাজার