অবশেষে পাল্লেকেলে টেষ্ট ড্র

অবশেষে পাল্লেকেলে টেষ্ট ড্র

অবশেষে পাল্লেকেলে টেষ্ট ড্র- সংগৃহীত ছবি

বোলারদের জন্য উইকেটে কিছুই ছিল না। পাঁচ দিনে উইকেট পড়েছে মাত্র ১৭টি। রান উঠেছে দুই দল মিলিয়ে তেরশ। এমন ম্যাচ ড্র না হয়ে উপায় নেই। অনুমিতভাবে ড্রই হয়েছে পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার প্রথম টেস্ট। বাজে উইকেটের জন্য ডেমিরিট পয়েন্ট পেতেই পারে পাল্লেকেলের স্টেডিয়াম।

প্রথম ইনিংসে শান্ত ও মুমিনুলের সেঞ্চুরিতে সাত উইকেটে ৫৪১ রানে ডিক্লিয়ার দেয় বাংলাদেশ। জবাবটা শ্রীলঙ্কাও দারুণ দিয়েছে। অধিনায়ক করুনারত্নের ডাবল সেঞ্চুরির সাথে ধনাঞ্জয়ের দেড়শোর্ধ্ব ইনিংস লঙ্কানদের পৌঁছে দেয় রান পাহাড়ে। চতুর্থ দিনে তো এই জুটিই ব্যাট করেছে বিরামহীন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ৬৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। জবাবে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত ব্যাট করে। তামিমের ফিফটিতে রান আসে ১০০।

তৃতীয় সেশন শুরুর আগে ঝামেলা পাকায় বৃষ্টি। পরে দুই অধিনায়ক ম্যাচ ড্র মেনে নেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এটি চতুর্থ টেস্ট ড্র। শ্রীলঙ্কার মাটিতে দ্বিতীয়। ২০১৩ সালে গলেতে প্রথম ড্র করেছিল বাংলাদেশ।

চতুর্থ দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ৫১২ রান। রোববার ম্যাচের শেষ দিনে দ্রুত রান তোলার তাগিদ ছিল। সে জন্যই মারমুখি ছিলেন করুনা ও ধনাঞ্জয়া। ফলে উইকেটও হারাতে হয় তাদের। তাসকিনের বলে বিদায় নেন রেকর্ড জুটি গড়া করুনা ও ধনাঞ্জয়া।

দিনের প্রথম উইকেট ধনাঞ্জয়া। তাসকিনের একটি শর্ট অব লেংথ বল ভেতরে ঢোকে একটু। খানিকটা নিচুও হয়।

ধনাঞ্জয়া হালকা লাফিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন থার্ডম্যানের দিকে। তার ব্যাটের কানায় লেগে বল ছোবল দেয় স্টাম্পে।
২৯১ বলে ২২ চারে ১৬৬ রানে আউট হন ধনাঞ্জয়া। টেস্টে তার সর্বোচ্চ স্কোর ১৭৩, বাংলাদেশের বিপক্ষেই। তার বিদায়ে ভাঙে করুনারত্নের সাথে ৩৪৫ রানের জুটি।

বাংলাদেশের বিপক্ষে যা শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ জুটি, চতুর্থ উইকেটে সব দেশে মিলিয়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে সেরা।
ধনাঞ্জয়া আউট হওয়ার পরপর লিড পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। তবে সেই লিড আর বেশি বাড়াতে পারেননি করুনারত্নে। তাসকিনের ১৪১ কিলোমিটার গতির শর্ট বল পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ দেন মিড উইকেটে।

৬৯৮ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে ৪৩৭ বল খেলে ২৪৪ রানে থামে করুনারত্নের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো অধিনায়কের সর্বোচ্চ ইনিংস এটিই।

পেছনে পড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রায়েম স্মিথের ২৩২।
তাসকিনের পর উইকেট শিকারির তালিকায় যোগ দেন পেসার এবাদত হোসেন। তিনি বিদায় করেন পাথুম নিশাঙ্কাকে। উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ২৩ বলে ১২ রান করা নিশাঙ্কা।

৩৩ বলে ৩১ রানে রান আউট হন নিরোশান ডিকভেলা। ডি সিলভাকে বোল্ড করে দেন স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৫৫ বলে ৪৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন সিলভা। সব মিলিয়ে তাসকিনের উইকেট তিনটি, তাইজুলের দুটি, এবাদত ও মিরাজের একটি করে।

১০৭ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। শুরুটা ছিল ভয়াবহ। আতঙ্ক চেপে বসেছিল, না জানি ম্যাচের রেজাল্ট হয়ে যায়। কারণ ২৭ রানে পড়ে দুই উইকেট। ৮ বলে ব্যক্তিগত এক রানে লাকমলের শিকার সাইফ হাসান। প্রথম ইনিংসে তিনি করেছিলেন শূন্য।

এরপর বিদায় নেন গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। দেড়শোর্ধ্ব ইনিংস খেলা শান্ত এবার বিদায় নেন রানের খাতা খোলার আগেই। তবে বল মোকাবেলা করেছেন ৮টি। তিনি লাকমলের বলে হন বোল্ড।

এরপর তামিম-মুমিনুল জুটিই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়। দলীয় রান তখন ৫২। তখনই ফিফটি করেন তামিম ইকবাল। ড্র হওয়া ম্যাচে ৯৮ বলে ১০টি চার ও তিন ছক্কায় ৭৪ রানে অপরাজিত তামিম ইকবাল। ৮৬ বলে ২৩ রানে অপরাজিত ছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।

আগামী ২৯ এপ্রিল ক্যান্ডির এই ভেন্যুতেই অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। ভেন্যু একই, রেজাল্ট কী হবে সেখানে, তা সময়ই বলে দেবে।