কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ

কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ

কওমি মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ-

কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে কওমি মাদরাসার সমন্বিত সর্বোচ্চ শিক্ষা বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ।

কওমি মাদরাসায় তৈরি হওয়া সঙ্কট ও অস্থিরতা দূর করে এ শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা এবং উলামায়ে কেরামের শান ও মান বজায় রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় নানামুখী দীনী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির উদ্যোগে আয়োজিত আল- হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়ার ডাকা রাজধানীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় আজ রোববারের বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয় বলে সাংবাদিক মুহাম্মদ বিন ওয়াহিদ জানান।

বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সভা শুরু হওয়া ওই বৈঠকে আল-হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি ওয়াক্কাসের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর জন্য দু‘আ করা হয়।

এছাড়াও ওই সভায় নিম্নের সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়।
১। কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আল-হাইআতুল উলয়া। আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোনো সংগঠন বা কোনো ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া পৃথকভাবে কওমি মাদরাসাবিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা উদ্যোগ নিতে পারবে না।

২। কওমি মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রচলিত সব ধরনের রাজনীতি থেকে দূরে থাকবে।

৩। আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া এবং এগুলো বাস্তবায়নের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীনস্থ পাঁচ বোর্ডের পাঁচজন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে পাঁচজন এবং চেয়ারম্যানের মনোনীত পাঁচজনের সমন্বয়ে সর্বমোট ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে।

ওই সভা থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদরাসার যে সব নিরীহ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসুল্লিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, রমজান মাসের বিবেচনায় সরকারের কাছে তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয় এবং নিরীহ আলেম-ওলামা, মাদরাসার শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হয়রানি না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।

সভায় বক্তারা সরকারের প্রতি দেশের সব মাদরাসা খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পবিত্র রমজান কুরআন তিলাওয়াতের মাস। কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে বালা-মুসিবত ও মহামারী দূর হয়। তাই রমজানের মধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেয়ার জন্য এবং রমজানের পর কওমি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান জানান তারা।

এছাড়াও আল-হাইআতুল উলয়ার আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করতে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গঠন করা হয়। তারা হলেন, মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।

ওই বৈঠকে আরো ছিলেন আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন। বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গার সভাপতি মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মহাসচিব মাওলানা শামসুল হক; আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা সুলতান যওকের প্রতিনিধি মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, মাওলানা আব্দুল হালীম বুখারীর প্রতিনিধি মাওলানা উবায়দুল্লাহ হামযাহ; আযাদ দীনী এদারায়ে তা‘লীমের সভাপতি মাওলানা জিয়াউদ্দীন এর প্রতিনিধি মাওলানা এনামুল হক, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর; তানজীমুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা মুফতি আরশাদ রাহমানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুস এবং জাতীয় দীনী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদের প্রতিনিধি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মহাসচিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, আল-হাইআতুল উলয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল ও অফিস সম্পাদক মাওলানা মুঃ অছিউর রহমান।