তীব্র বিমান হামলার মধ্যেই গাজায় পালিত হচ্ছে ঈদ

তীব্র বিমান হামলার মধ্যেই গাজায় পালিত হচ্ছে ঈদ

তীব্র বিমান হামলার মধ্যেই গাজায় পালিত হচ্ছে ঈদ

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর পালনের মধ্যেই ইসরাইলি বিমানের বোমাবর্ষণে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে গাজার বিভিন্ন স্থান।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুসারে, সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই বিমান হামলায় ১৭ শিশু ও আট নারীসহ ৬৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া হামলায় ৩৯০ জনের বেশি লোক আহত হয়েছেন।

এর আগে অধিকৃত জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইহুলি বসতি স্থাপনে ইসরাইলি আদালতের আদেশের জেরে ফিলিস্তিনিদের সাম্প্রতিক বিক্ষোভে পরপর কয়েক দফা মসজিদুল আকসায় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদুল আকসা থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে ইসরাইলকে আলটিমেটাম দেয় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর গাজা থেকে ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামাস রকেট হামলা শুরু করে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরাইলি ভূখণ্ডে অন্তত এক হাজার পাঁচ শ’ রকেট নিক্ষেপ করেছে হামাস। ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমে বেশিরভাগ রকেট ধ্বংস করা হলেও বেশ কিছু রকেট ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এতে এক সৈন্যসহ অন্তত ছয় ইসরাইলি নিহত হয়েছেন এবং আরো ৪৫ জন আহত হয়েছেন।

হামাসের রকেট হামলার পর ইসরাইল সোমবার রাত থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে।

এদিকে হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় তার সংগঠনের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ইসরাইলি হামলায় হামাস ‘জায়নবাদি ভূখণ্ডজুড়ে তার জবাবের বিস্তার করতে যাচ্ছে।’

এদিকে ফিলিস্তিনে সহিংসতার বিস্তারে তিউনিসিয়া, নরওয়ে ও চীনের অনুরোধে শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের আবার জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি সংশ্লিষ্ট কূটনীতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, প্রকাশ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন।

এর আগে ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে আরো দুই দফা নিরাপত্তা পরিষদের গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাধায় পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয় জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

গত ২৫ এপ্রিল জেরুসালেমের ইসরাইলি ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ছয় ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের বাড়ি ইসরাইলি নাগরিকদের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দেন। এতে করে ১০ শিশুসহ ৪০ ফিলিস্তিনি বাসিন্দা তাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের বাস করা ঠিকানা থেকে উচ্ছেদের শঙ্কায় রয়েছেন।

ফিলিস্তিনিরা ওই আদেশের প্রতিবাদে জেরুসালেমসহ পশ্চিম তীর, গাজা ও ইসরাইলে বিক্ষোভ অনুষ্ঠান করে আসছেন।

১৯৬৭ সালে ছয় দিনের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর মসজিদুল আকসাসহ পুরো জেরুসালেম ইসরাইল দখল করে নেয়। আন্তর্জাতিক আইনে অধিকৃত ভূমি হিসেবে বিবেচিত হলেও ইসরাইল শহরটিকে একীভূত করে নেয় এবং অখণ্ড জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করে। বিভিন্ন সময় শহরটিতে থাকা ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইসরাইলি ইহুদিদের শহরে আবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

সূত্র : আলজাজিরা