সুজানগরে জীবিত শতবর্ষী ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে বয়স্কভাতা বন্ধ

সুজানগরে জীবিত শতবর্ষী ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে বয়স্কভাতা বন্ধ

বয়স্কভাতা বঞ্চিত লোকমান হোসেন মন্ডল

পাবনার সুজানগরে ১০৪ বছর বয়সের শতবর্ষী এক ব্যক্তি জীবিত থাকার পরও তাকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা দেয়া বন্ধ করা হয়েছে। বয়স্কভাতা বঞ্চিত লোকমান হোসেন মন্ডল সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামের মৃত উজির মন্ডলের ছেলে। তার জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৮ আগস্ট ১৯১৭ সাল। ভোটার আইডি নং- ৭৬১৮৩৭৬৩৩৫৫২৬।

সমাজসেবা অধিদপ্তর ও সমাজকল্যাণ বইয়ের আলোকে জানাগেছে, লোকমান হোসেন মন্ডল ২০২০ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ভাতা পেয়েছেন। পরবর্তীতে তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে তিনি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে  আর কোন ভাতা পাচ্ছেন না।

লোকমান হোসেন বলেন,তিনি জীবিত থাকতেই তাকে কীভাবে মৃত দেখানো হয়েছে, তিনি বুঝতে পারছেন না। সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সামছুল আলম বলেন, লোকমান হোসেন জীবিত আছেন। আমার পরিষদ থেকে তাকে মৃত ঘোষণা করেনি; তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিভাবে তাকে মৃত বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের তথ্য সংগ্রকারীদের খামখেয়ালিতে অসহায় ও দরিদ্র এই মানুষটির সরকারি সহায়তা(বয়স্কভাতা) বন্ধ হয়েছে। আর ভাতার টাকা না পাওয়ায় বৃদ্ধ লোকমানকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমন্বয়কারী নূরে শাহরিন বলেন লোকমান হোসেন মন্ডলের মত একই ইউনিয়নে শ্রী কণিকা রাণী সাহা নামক আরো এক নারীর ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে।

সুজানগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশনের(ইসি) ভোটার তালিকার সার্ভারে লোকমান হোসেনের নাম নেই। তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। সেজন্য তার বয়স্কভাতা বন্ধ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রকারীরা নির্বাচন অফিসে ভুল তথ্য দিয়েছেন। এ কারণে লোকমান হোসেন মন্ডল জীবিত থাকলেও মৃত দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে ভুক্তভোগীরা আবেদন করলে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। ভুল তথ্য সংগ্রকারীদের বিরুদ্ধে কী ধরণের ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এলাকাবাসী তথ্য সংগ্রহকারীদের শনাক্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।