পদ্মা-যমুনায় হুহু করে বাড়ছে পানি, তলিয়ে গেছে উঠতি ফসল

পদ্মা-যমুনায় হুহু করে বাড়ছে পানি, তলিয়ে গেছে উঠতি ফসল

পদ্মা-যমুনায় হুহু করে বাড়ছে পানি, তলিয়ে গেছে উঠতি ফসল

উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও প্রবল বর্ষণে পদ্মা, যমুনা ও শাখা নদীগুলোতে হুহু করে পানি বাড়ছে অস্বাভাবিকভাবে। শংকিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী মানুষ। পানি বেড়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চলের শত শত বিঘা জমির বাদাম, তিল, পাকা ধান, শাকসবজিসহ উঠতি ফসল তলিয়ে গেছে। কষ্টে ফলানো ফসল ডুবে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাদাম, ধান ও তিলের।ঈশ্বরদী-লালপুরের সীমান্ত এলাকার চরে আবাদ করা বেশিরভাগ বাদাম ক্ষেত এখন পানির নিচে।

পাবনার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন একদিন আগের পানি পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে বলেন,“সোমবার (০৬ জুন) বিকেল ৩টায় পাকশীর পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানি পরিমাপ করে প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৩১১ কিউসেক। পানির এই বৃদ্ধি অস্বাভাবিক বলে জানান তিনি।

পানি পরিমাপ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, গত বছর এই সময়ে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৭ দশমিক ৫৩ মিটার। এ বছর এই সময়ে পদ্মার পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে বর্ষার আগেই বিপৎসীমার কাছাকাছি গিয়ে ঠেকতে পারে।

পদ্মায় গিয়ে দেখা গেছে, হার্ডিঞ্জ ব্রীজের ১৫টি স্প্যানের  মধ্যে ১৩টির নিচেই এখন হুহু করে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এই সময়ে অন্যান্য বছর ব্রীজের অর্ধেকের নিচেই ধু-ধু বালুচর থাকে। অথচ এবার পানিতে ভরে গেছে নদীর দু’কূল। প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, ‘৮৮ সালের পর পদ্মা নদীর এই রূপ আর দেখেননি তারা।

নদী ও পানি গবেষক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যমুনা ও পদ্মার উৎস যমুনাত্রী ও গঙ্গাত্রীর প্রধান হিমবাহ হিমালয় পর্বতের বরফ গলা পাহাড়ী ঢলের কারণে এই সময়ে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের দেয়া তথ্য মতে, এ মৌসুমে পদ্মার চরা লে বিভিন্ন ফসলের আবাদ হয়েছে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে। নদীতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরা লের বিস্তীর্ণ এলাকার আবাদি ফসল তলিয়ে গেছে।

সাঁড়া ইউনিয়নের কৃষক ইন্তেজার আলী জানান, এ বছর তেমন বন্যা না হওয়ায় চরের ৫ বিঘা জমিতে আগাম মাষকলাই চাষ করেছিলেন। ফলনও ভালো হয়েছিল। কিন্তু পদ্মার পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ফসল তলিয়ে গেছে।

উত্তরা ল পানি পরিমাপক বিভাগ ও পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম জানান, সোমবার বিকেল ৩টায় হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে সর্বশেষ পানি পরিমাপ করে পদ্মা নদীতে ১ লাখ ৯১ হাজার ৩১১ কিউসেক পানি পাওয়া গেছে। গত বছর এই সময়ে পানিপ্রবাহ ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৮ কিউসেক।