ইবি ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে আল্টিমেটাম

ইবি ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে আল্টিমেটাম

ইবি ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে আল্টিমেটাম-

দীর্ঘ ১১ বছর পর গতকাল বুধবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রদলের জন্য নতুন আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। তবে কেন্দ্রের দেওয়া এ কমিটিতে দলীয় নীতিমালা না মেনে বিবাহিত, অছাত্র ও বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের পদ দেওয়ার অভিযোগ করে এ কমিটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছেন পদ প্রত্যাশী নেতাদের একাংশ। এ ছাড়াও এ কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি দিতে কেন্দ্রকে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামও দেন তারা। অন্যথায় কেন্দ্র ঘোষিত এ কমিটি থেকে গণপদত্যাগ করে কমিটিকে প্রতিহত করার হুমকি দেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) বিকেলে ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক (১) পদ পাওয়া ছাত্রদল নেতা আনোয়ার পারভেজ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় কমিটি প্রত্যাখানের ঘোষণা দেওয়া অন্য নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাহেদ আহম্মেদকে আহবায়ক এবং ইংরেজি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রুমী মিথুনকে সদস্য সচিব করে ৩১ সদস্যের কমিটি দেওয়া হয়। কমিটিতে ১৬ জনকে যুগ্ম আহবায়ক ও ১২ জনকে সদস্য পদ দেওয়া হয়। কমিটি ঘোষণার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসন্তোস প্রকাশ করেন একাংশের নেতাকর্র্মীরা। সংবাদ সম্মেলন করে পদ পাওয়া ১২ জন সদস্য কমিটি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন।

সাংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, ‘দলের ত্যাগী নেতাদের যথার্থ মূল্যায়ন না করে অছাত্র, বিবাহিত ও বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের কমিটির শীর্ষ পদ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আহবায়ক পদ পাওয়া সাহেদ আহম্মেদ ২০০৮ সালে তার এক বান্ধবীকে পানির বোতলে প্র¯্রাব তুলে খাওয়ান। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে বিশ^বিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিস্কার করা হয়। এ ছাড়া সংগঠনের নীতিমালা অনুযায়ী বিবাহিতদের কোন পদ পাওয়ার সুযোগ না থাকলেও সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন বিবাহিত হলেও তাকে পদ দেওয়া হয়েছে। 

আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘বান্ধবীর সাথে অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য বহিস্কার হওয়া ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীকে আহবায়ক ও নীতিমালা না মেনে বিবাহিত ব্যাক্তিকে সদস্যসচিব করে কমিটি দিয়ে ছাত্রদলের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন যারা সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে তাদের বাদ দিয়ে অচেনা অজানা অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে। আমরা এ কমিটি মানিনা। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এই কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি না দিলে আমরা এক সঙ্গে সবাই পদত্যাগ করব এবং এই কমিটিকে প্রতিহত করব।’ 

অভিযোগের বিষয়ে আহবায়ক সাহেদ আহমেদ বলেন, ‘বান্ধবীর সাথের ঘটনার সাথে রাজনৈতিক কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আর আমি ২০১০ সালের কমিটিতেও পদ পেয়েছিলাম। কেন্দ্র খোঁজ খবর নিয়েই কমিটি দিয়েছে। আর সদস্য সচিবের বিয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন। অভিযোগ সত্য হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে কমিটির যুগ্ম আহবায়ক শাহনুর হোসেন, আহসান হাবীব, সবুজ হোসাইন, মেহেদি হাসান হীরা, সদস্য ওসমান, সাব্বির, রাফসান জনিসহ ইবি প্রেসক্লাব ও সাংবাদি সমিতির সদস্যরা অংশগ্রহণ করেন।