শিক্ষাবান্ধব সমাজব্যবস্থা ফিরে আসুক

শিক্ষাবান্ধব সমাজব্যবস্থা ফিরে আসুক

জাহিদ হাসান (নয়ন)

জীবনের উন্নয়নের প্রধান সোপানই হলো শিক্ষা। চাণক্য বলেছেন,“বিদ্বান সকল গুণের আধার,অজ্ঞ সকল দোষের আকর। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্যান অনেক কাম্য।” একটি জাতী বা দেশকে বিশ্বের দ্বারপ্রান্তে পরিচয় করিয়ে দিতে হলে সর্বপ্রথম যেটি প্রয়োজন তা হলো-সে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি।

উন্নত শিক্ষা ধারণ করে একজন ব্যক্তি তার পারিপাশ্বিক জীবন ব্যবস্থা,সমাজ ব্যবস্থা বদলে দিতে পারে। এমনকি দেশের ভাবমূর্তি অন্য দেশের নিকট তুলে ধরতে পারে।তবে যদি সেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়ে তাহলে জাতী ক্রমশ অন্ধকারাচ্ছন্নে নিমজ্জিত হবে। বাট্রা- রাসেল বলেছেন,“মানুষের সুখী হওয়ার জন্যে সবচেয়ে বেশি দরকার বুদ্ধির-এবং শিক্ষার মাধ্যমে এর বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব।”

আমরা জানি,২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরেই প্রথম করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিলো। তবে বাংলাদেশে এ মহামারী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ ২০২০।এখনও অবধি এ বৈশ্বিক মহামারী সর্বত্র বিরাজমান।

বর্তমান এ উদ্ভূত পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে,দেশের জনগণকে সুস্থ্য রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।তবে করোনা ভাইরাস বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে  বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ আছে।
দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে শিক্ষা ব্যবস্থায় মরীচা ধরে যাচ্ছে।প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সহিত কথা বলে যেটা জানতে পেরেছি তা হলো যে সমস্ত ছেলে-মেয়ে পিতা-মাতার কষ্টার্জিত টাকার দ্বারা পড়ালেখা করতো তারা এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পড়ালেখা বাদ দিয়ে পিতা-মাতার সহিত অন্যের জমিতে শ্রম দিচ্ছে।পিতা-মাতাও ভাবছে ,দেশের যে পরিস্থিতি তাহাতে আর সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে লাভ নেই,তারা বরং আমাদের সহিত কর্ম ক্ষেত্রে শামিল হোক। লোকালয়ে বসবাসরত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে দেখা দিয়েছে পড়ালেখার প্রতি চরম অনিহা।

আমরা যেহেতু প্রাকৃতিকভাবেই সমাজে বসবাস করি ,সেহেতু কবে নাগাদ এই মহামারী দেশ থেকে একেবারে নির্মূল হবে সে সম্পর্কে কেহ অবগত নয়।প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করেই আমাদের চলতে হবে।তাই শিক্ষা ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে প্রথমে স্বল্প পরিসরে হলেও গ্রামাঞ্চলের দিক থেকে শুরু করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দিকে নজর দেওয়া উচিত।তাহলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

অন্য দিকে হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষিত বেকার শ্রেনীর সংখ্যা। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নানা রকম হতাশা।ধীরে ধীরে বয়সের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ এ হতাশা থেকে বাঁচার জন্য বেছে নিচ্ছে ভিন্ন-ভিন্ন কাজ। পরিবারের চাপের মুখে পড়ে হতাশার গ্লানি শুধু চোখে-মুখে। কখন সচল হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কবে হবে নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম।  শিক্ষিত সমাজের প্রতি উদাত্ত আহবান আপনারাই পারেন জাতীকে আবার শিক্ষার ছত্র-ছায়ায় ফিরিয়ে আনতে।স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে, কীভাবে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মনোনিবেশ করানো যায় সে দিকে খেয়াল রাখা বর্তমান সময়ের জন্য অতীব জরুরি।

 

লেখকঃ জাহিদ হাসান (নয়ন)

শিক্ষার্থী,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়-কুষ্টিয়া