গুনাহর কারণে জীবনের বরকত নষ্ট হয়

গুনাহর কারণে জীবনের বরকত নষ্ট হয়

গুনাহর কারণে জীবনের বরকত নষ্ট হয়

দুনিয়ার সব কাজের প্রভাব আছে। গুনাহর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। গুনাহর দরুন মানুষ ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গুনাহর ইহকালীন অন্যতম ক্ষতি হলো এটি জীবনের বরকত কমিয়ে দেয়। আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, গুনাহর ফলে আয়ু কমে। এটি চোখের সামনেই দৃশ্যমান যে মদ্যপ, চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী এবং পেশাদার খুনি বেশিদিন দুনিয়ায় থাকতে পারে না। দৃশ্যত দেখা যায়, তাদের হায়াত কম। খুব অল্পদিনেই তাদের জীবনের পাট পরিসমাপ্ত হয়ে যায়।

এসব ঘটনা কাকতালীয় নয়, বরং প্রকৃতপক্ষে এটি গুনাহর কুপ্রভাব। গুনাহ হায়াতের বরকত কমিয়ে দেয়, যেভাবে নেক কাজ হায়াতের বরকত বাড়িয়ে দেয়। সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)  ইরশাদ করেন, ‘একমাত্র দোয়া ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে এবং হায়াতের বরকত নেক কাজ করলে বেড়ে যায়।’ (মুস্তাদরাক হাকিম, হাদিস : ১৮১৪, ৬০৩৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৮৯, ৪০৯৪)

প্রকৃত অর্থে জীবন বলতে আত্মার জীবনকেই বোঝানো হয়। আর আত্মার জীবন বলতে ওই জীবন, যা মহান আল্লাহর জন্য ব্যয় হয়। নেক কাজ, আল্লাহভীরুতা ও তাঁর আনুগত্য এই জীবনের পরিধি বাড়িয়ে দেয়।

অন্যদিকে একটি গুনাহ আরেকটি গুনাহর জন্ম দেয়। পরিশেষে গুনাহ করতে করতে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়ায় যে গুনাহ থেকে বের হওয়া তার পক্ষে আর সম্ভব হয় না। এর বিপরীতে একটি নেক কাজ আরেকটি নেক কাজের উৎসাহ জন্ম দেয়। এভাবে নেক ও গুনাহ অভ্যাসে পরিণত হয়। তখন এমন হয় যে কোনো নেককার নেক কাজ করতে না পারলে সে অস্থির হয়ে পড়ে এবং কোনো বদকার নেক কাজ করতে চাইলে তার জন্য তা কঠিন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে তার মন বসে না। ফলে দেখা যায়, অনেকে গুনাহ করছে ঠিকই, কিন্তু সে আর গুনাহে মজা পাচ্ছে না। তবে সে তা এ কারণেই করে যাচ্ছে, সে তা না করলে মনে খুব অস্থিরতা অনুভব করে।

বান্দা যখন বারবার নেক কাজ করতে থাকে, নেক কাজকেই সে ভালোবাসে এবং নেক কাজকেই সে অন্য কাজের ওপর প্রাধান্য দেয়, তখন মহান আল্লাহ তাকে ফেরেশতা দিয়ে সহযোগিতা করে থাকেন। এরই বিপরীতে যখন কেউ বারবার গুনাহ করতে থাকে, গুনাহকে ভালোবাসে এবং গুনাহকে নেক কাজের ওপর প্রাধান্য দেয়, তখন আল্লাহ তাআলা তার ওপর শয়তানকে ছেড়ে দেন। তখন সে তার পক্ষ থেকে শয়তানের সহযোগিতা পেয়ে থাকে। এভাবে তার ধ্বংস ত্বরান্বিত হয়।