টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে ইতালি

টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে ইতালি

টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে ইতালি-

অন্ধকার থেকে আলোর পথে ইতালির ফুটবল। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি পাওলো রোসির দেশ। তখন বড় খারাপ সময় ছিল ইতালির। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে দেশের দায়িত্ব নেন রবার্তো ম্যানচিনি। তার পর থেকে মেঘের উপর দিয়ে হাঁটছেন তিনি। ইউরো কাপের সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল ‘আজুরি’রা। 

খেলার ৬০ মিনিটে রবার্তো ম্যানচিনিকে স্বস্তি এনে দিয়েছিলেন ফেদেরিকো কিয়েসা। দুরন্ত এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে কাঙ্খিত গোলটি করেন তিনি। তার ঠিক ২০ মিনিট পরেই সমতা ফেরায় স্পেন। আলভারো মোরাতা ইতালির জালে বল জড়ান। তার পরে কোনও দলই আর গোল করতে পারেনি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোল করতে পারেনি কেউই। ইতালি ম্যাচ জিতে নেয় পেনাল্টি শুট আউটে। যে মোরাতা স্পেনকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন, সেই তিনিই আসল সময়ে পেনাল্টি স্পট থেকে গোল করতে পারলেন না। ইতালির জর্জিনহোর শট জালে জড়াতেই স্বপ্ন ভাঙল লুইস এনরিকের।  

শেষ চারের লড়াই শুরু হয়েছিল অন্য ভাবে। স্পেন মাঝমাঠ দখল করে নিয়েছিল প্রথম থেকেই। আর এই ধরনের ম্যাচে বলের দখল এবং মাঝমাঠ যদি দখল করে নেয় ‘বুলফাইটিং’য়ের দেশ, তাহলে তাদের থামানো কঠিন হয়ে যায়। স্পেনের পাসিং ফুটবলে ইতালি তখন দিশাহারা। ক্রমশ পিছু হঠছিলেন ইনসিনিয়েরা। স্পেনের আক্রমণে ইতালির ডিফেন্সে দেখা যাচ্ছিল অসংখ্য ফাঁকফোকড়। প্রথমার্ধেই স্পেনকে এগিয়ে দেওয়ার সুযোগ এসেছিল মিকেলের কাছে। পেদ্রির ঠিকানা লেখা পাসটা সেযাত্রায় বুঝতে পারেননি মিকেল। পরে ড্যানি ওলমোর প্রয়াস ব্যর্থ করেন ইতালির গোলকিপার দোনারুমা। ম্যানচিনির দলকে ম্লান দেখাচ্ছিল স্পেনের কাছে। বিরতির কিছু আগে ঝলসে ওঠেন ইনসিনিয়ে। তাঁর পাস থেকে এমার্সন চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু স্পেনের গোলকিপার উনাই সিমোন দলের বিপদ দূর করেন।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যানচিনিকে কিছু করে দেখাতেই হতো। স্পেন স্বভাবসিদ্ধ আক্রমণের ঝড় তোলে। বুস্কেটসের শট অল্রের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুর্দান্ত এক কাউন্টার অ্যাটাকে স্পেনকে ধাক্কা দেয় ইতালি। নিজেদের পেনাল্টি বক্স থেকে এত দ্রুত আক্রমণ তুলে আনে ইতালি যে রক্ষণ গোছাতে পারেনি স্পেন। বাঁ দিকে বিদ্যুতের গতিতে বল নিয়ে দৌড়ন ভেরাতি। স্পেনের পেনাল্টি বক্সের ঠিক উপরে দাঁড়ানো ইমমোবিলের উদ্দেশে বল বাড়ান তিনি। স্পেনের ডিফেন্ডার লাপোর্ত ব্লক করেন। সুযোগের অপেক্ষাতেই যেন ছিলেন কিয়েসা। বল পেয়েই তিনি স্পেনের জাল কাঁপান।

এর পরেও গোল করার মতো একাধিক সুযোগ তৈরি করেছিল স্পেন। ফাঁকায় দাঁড়ানো কোকে হেড করতে পারেননি। এনরিকোর দলকে ম্যাচে ফেরান মোরাতা। স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস করায় খুনের হুমকি পাচ্ছিলেন স্প্যানিশ তারকা। তাঁর পুরো পরিবারকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ক্রমাগত উড়ো ফোন আসছিল। সেই মোরাতা স্পেনকে ম্যাচে ফেরান। ড্যানি ওলমোর সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে ইতালির ডিফেন্সে ভাঙন ধরিয়ে গোল করে যান মোরাতা। অতিরিক্ত সময়েও দাপট দেখাচ্ছিল স্পেন। অন্যদিকে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর খেলার উপরে জোর দিয়েছিল ইতালি। কিন্তু কোনও দলই আর গোল করতে পারেনি। টাইব্রেকারের প্রথম শট নষ্ট করে দু’দলই। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শট থেকে উভয় দলই গোল করে।  চতুর্থ শট থেকে ইতালির বের্নাডেস্কি গোল করলেও মোরাতার দুর্বল শট বাঁচিয়ে দেন দোনারুমা। পঞ্চম শট থেকে জর্জিনহো গোল করে ইতালিকে নিয়ে যান ফাইনালে। পঞ্চম শট নেওয়ার আর দরকার পড়েনি স্পেনের। -সংবাদ প্রতিদিন