চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে: কলা ৫৬ টাকা, ডিম ৬১ টাকা, খাসীর মাংসের স্থলে পাঙ্গাস মাছ

চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে: কলা ৫৬ টাকা, ডিম ৬১ টাকা, খাসীর মাংসের স্থলে পাঙ্গাস মাছ

পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বালানী-পাউরুটি-ডিম-কলা কান্ড! মামলা দায়ের

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন অর্থ বছরের শুরু থেকেই ভর্তিকৃত রোগীদের নিম্নমানের খাবার দেয়া হচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়,সর্বোচ্চ দরদাতা ঠিকাদারকে রোগীদের পথ্য সরবরাহের ওয়ার্ক অর্ডার প্রদান করা হয়েছে। 

অবিশ্বস্য হলেও সত্য, সেখানে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত একটি পাউরুটির দাম ধরা হয়েছে ২২ টাকা ৯৮ পয়সা, একহালি কলার দাম প্রায় ৫৬ টাকা, এক হালি ডিমের দাম প্রায় ৬১ টাকা, এক কেজি চিনির দাম ১১০ টাকা আর এক মণ খড়ির দাম ৮ শত টাকা।

মাছ, মাংস,ডাউল, মসলা, বিস্কুটসহ অন্যান্য পণ্যের দামও আকাশ ছোঁয়া। এ যেন পাবনার ঈশ্বরদীর রুপপুরের বালিশ কাণ্ডকেও হার মানিয়েছে। 

অভিযোগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ওমর ফারুক বুলবুলের যোগ সাজসেই এমনটা হয়েছে। এতে সরকারি টাকা লুটপাটের আয়োজন করা হয়েছে। অবশ্য এ ঘটনার কারণে পাবনার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অজিফা ট্রেডার্স আদালতে মামলা করেছেন। যদিও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মামলার কারণ দর্শানোর কোন জবাব না দিয়ে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পথ্য সরবরাহের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

গত সোমবার (৫ জুলাই) হাসপাতালে রোগীদের দুপুরের খাবার হিসেবে ভাতের সাথে খাসীর মাংস দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে দেয়া হয় পাঙ্গাস মাছ। বিষয়টি এলাকার মানুষ ও রোগীর অভিভাবকরা জানার পর প্রতিবাদ করলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পুলিশ ডেকে এনে প্রতিবাদকারীদের হেনস্থা করার অপচেষ্টা করেন।

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের পথ্য সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। সেখানে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া হয়নি। গত ১ জুলাই থেকে নতুন ঠিকাদার রোগীদের পথ্য সরবরাহ করছে। সেখানে অতি নিম্নমানের খাবার দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানার পরও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ওমর ফারুক বুলবুল ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আরমিনা আকতার রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছেন। বাজারে যেখানে এক হালি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫ টাকা, এক হালি কলার দাম ২০ টাকা, একটি পাউরুটির দাম ১০ টাকা, এক কেজি চিনির দাম ৭০ টাকা আর ১মণ খড়ির দাম ৩ শত টাকা। সেখানে দ্বিগুণ দাম ধার্য করা হয়েছে। 

প্রতিদিনই রোগীদের নিম্নমানের ও কম পরিমাণ খাবার দিয়ে পুকুর চুরি করা হচ্ছে। রুপপুর বালিশ কান্ডের মতোই চাটমোহর হাসপাতালে চলছে কলা, পাউরুটি, ডিম, খড়ি কান্ড। টেন্ডারে অংশ নেয়া একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার যোগসাজসেই সর্বোচ্চ দরদাতাকে কাজ দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের অর্থ লুটপাট করা হবে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ওমর ফারুক বুলবুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দামের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। নিম্নমানের খাবার দেয়া হলে দেখা হবে। খাসীর মাংস না পাওয়ায় সোমবার পাঙ্গাস দেয়া হয়েছে। পরে সংশোধন করা হবে। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আদালতে মামলা থাকার কারণে কমেন্ট করা যাবেনা। তবে সর্বনিম্ন দরদাতাই কাজ পেয়েছে’।