স্বপ্নের ফাইনালে ইংল্যান্ড

স্বপ্নের ফাইনালে ইংল্যান্ড

স্বপ্নের ফাইনালে ইংল্যান্ড, থেমে গেল ডেনিশ রূপকথা - ছবি : সংগৃহীত

ইউরো ফাইনালে চলে গেল ইংল্যান্ড। হ্যারি কেনের জয়সূচক গোলে অতিরিক্ত সময়ে ডেনমার্ককে ২-১ ব্যবধানে হারাল ইংরেজরা। রবিবার ফাইনালে তাদের সামনে ইতালি।

৩০ মিনিটে মাইকেল ড্যামসগার্ডের ফ্রিকিক থেকে করা গোলে এগিয়ে যায় ডেনমার্ক। লুক শ প্রায় কুস্তির মতো ডেনমার্কের আন্দ্রেস ক্রিসটেনসেনকে ফেলে দেন। রেফারি ফ্রিকিক দেন। ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে বাঁদিকের কোন দিয়ে বল জালে পাঠান ড্যামসগার্ড। ইংরেজ গোলরক্ষক জর্ডন পিকফোর্ডের কিছু করার ছিল না। তিনি বলে হাত ঠেকাতে পেরেছিলেন। কিন্তু দলকে বাঁচাতে তা যথেষ্ট ছিল না।

অনেকটা ঋণ পরিশোধই যেন করলেন গ্যারেথ সাউথগেট। ১৯৯৬ ইউরোতে ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ ছিল জার্মানি। টাইব্রেকারে সাউথগেটের পেনাল্টি মিসে স্বপ্নভঙ্গ ইংলিশদের। জাতীয় ভিলেন বনে গিয়েছিলেন ফুটবলার সাউথগেট।

ওই সাউথগেট এবার ইংল্যান্ডের জাতীয় হিরো। ফুটবলার হিসেবে নয়, কোচ হিসেবে। তার কোচিংয়ে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরো ফুটবলের ফাইনালে ইংলিশরা। ডেনমার্ককে হারিয়ে। সাউথগেট এখন নিজেকে পরম সুখী ভাবতেই পারেন।

ম্যাচে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য করেছে ইংল্যান্ড। ১২০ মিনিটের লড়াইয়ে গোলের উদ্দেশে ২০টি শট নেয় তারা, যার ১০টিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে ঘর সামলাতে ব্যস্ত ডেনিশরা নিতে পারে মোটে ৬ শট, যার চারটি ছিল লক্ষ্যে।

৩০ মিনিটে ওয়েম্বলিকে নিস্তব্ধ করে এগিয়ে যায় ডেনমার্ক। মিকেল ডামসগার্ডের দুর্দান্ত ফ্রি কিকে বল রক্ষণ দেয়ালের ওপর দিয়ে গিয়ে শেষ মুহূর্তে একটু নিচু হয়ে ক্রসবার ঘেঁষে জালে জড়ায়। পিকফোর্ড ঝাঁপিয়ে বলে আঙুল ছোঁয়ালেও রুখতে পারেননি। এবারের ইউরোয় সরাসরি ফ্রি কিকে এটাই প্রথম গোল। চলমান আসরে প্রথম গোল হজম ইংল্যান্ডের।

৩৯ মিনিটে ম্যাচে ফেরে ইংল্যান্ড। যদিও এই গোলে আছে ভাগ্যের ছোয়া। বুকায়ো সাকা বাইলাইন থেকে গোলমুখে স্টার্লিংয়ের উদ্দেশে ক্রস বাড়ান। সেটাই রুখতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করে বসেন ডেনমার্ক অধিনায়ক সিমোন কেয়া। স্কোর ১-১।
দ্বিতীয়ার্ধে হয়নি কোনো গোল। তবে সাঁড়াশি আক্রমণ করে গেছে ইংল্যান্ড। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। এখানেই বাজিমাত ইংল্যান্ডের। যদিও কেইনের জয়সূচক গোল নিয়ে আছে বিতর্ক।

১০৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। কেইনের কিক ফেরান ডেনিশ গোলরক্ষক স্মাইকেল। কিন্তু বল হাতে রাখতে পারেননি, আলগা বল ছুটে গিয়ে জালে পাঠান কেইন।

পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠছে। ডি-বক্সে স্টার্লিংকে বাধা দিতে জোয়াকিম পা বাড়িয়েছিলেন বটে, তবে একটু সহজেই যেন পড়ে যান ইংলিশ মিডফিল্ডার। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত ভিএআরের বজায় থাকে। শেষ অবধি ফাইনালে উঠার আনন্দে মাতে ইংল্যান্ড। ডেনমার্ক শিবিরে বেদনার নিস্তব্ধতা।

সেই ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর, ৫৫ বছর পর কোনো বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে আবার ইংল্যান্ড। ওয়েম্বলিতে ১১ জুলাই ইতালির বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে তারা শিরোপার জন্য। একটি ট্রফির জন্য ফুটবল-পাগল ইংলিশদের ৫৫ বছরের অপেক্ষার অবসান হবে তো? পারবে সাউথগেটের দলটি?