কোভিড-১৯: তরুণ উদ্যোক্তা সোহেল কোরবানির দুম্বা নিয়ে বিপাকে

কোভিড-১৯: তরুণ উদ্যোক্তা সোহেল কোরবানির দুম্বা নিয়ে বিপাকে

সোহেলের খামারে ১২০ কেজি ওজনের দুম্বা, দাম ৩ লাখ টাক- ছবি: মাহফুজ আলম

পাবনা প্রতিনিধি: পাবনার ঈশ্বরদীর তরুণ উদ্যোক্তা দুম্বার খামারি সোহেল হাওলাদার (৩০) করোনায় লকডাউনে চরম দুশ্চিন্তায়।  কোরবানিকে কেন্দ্র করে সোহেল  পাঁচ বছর ধরে দুম্বাসহ উন্নতজাতের ছাগলের খামার পরিচালনা করে থাকেন। তিনি এবার ৩০টি দুম্বা ও ৮০ টি ছাগল (খাসি) পালন করেছেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে কোন ক্রেতা তার খামারে আসতে পারছেন না। তাই তিনি তার দুম্বা ও ছাগলগুলো বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ঈশ্বরদী পৌর এলাকার কাঁচারিপাড়ার ইব্রাহিম হাওলাদারের বড় ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে বাবার সাথে ভারত থেকে পণ্য আমদানির ব্যবসায় শুরু করেণ। রাজস্থানে যেয়ে তিনি দুম্বা ও তোতাপুরি প্রতিপালনে আগ্রহী হন। বাড়িতেই গড়ে তোলেন খামার। প্রথমে ঢাকা থেকে ৫টি দুম্বা নিয়ে তার খামারের শুরু। তিনি খামার করে  বেশ সফল হয়েছেন। প্রতি বছর এ থেকে সোহেল খরচ খরচা বাদে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা লাভ করে থাকেন।

সোহেল গত পাঁচ বছর ধরে কোনবানির ঈদকে সামনে রেখে দুম্বার পাশাপাশি খামারে মূল্যবান তোতাপুরি, হরিয়ানা, পাকিস্তানী বিটল ও দেশীয় মোট ৮০টি ছাগল প্রজাতির প্রাণি পালন করে অসছেন। তার পালনকৃত দুম্বা ও ছাগলগুলো বেশ হস্টুপুষ্ট। কিন্তু লকডাউনে পরিবহণ বন্ধ থাকায় অতি মূল্যবান এসব কোরবানির পশু নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, অনেকে এখন তার খামারে দুম্বা ও ছাগল জাতীয় প্রাণি দেখে আকৃষ্ট হচ্ছেন এবং খামার করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন বলে জানান। 
সোহেল জানান, ৩০টি দুম্বার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার অনলাইনে যোগাযোগ করে সাতক্ষীরায় দু’টি দুম্বা বিক্রি করেছেন। একটি ২ লাখ পঞ্চাশ হাজার ও আরেকটি ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

তিনি আরও বলেন, কোরবানির বাজারে বড় সাইজের প্রায় ১১০-১২০ কেজি ওজনের দুম্বার দাম তিন লাখ টাকা। গাভীন দুম্বা ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। বাচ্চা দুম্বার দাম ১ লাখ টাকা। এছাড়াও তার কাছে ১২০ কেজি ওজনের ৮টি তোতাপুরি ছাগল রয়েছে। যার দাম ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।  সোহেল বলেন,‘কোরবানির জন্য দেশে দুম্বার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কঠোর লকডাউনে পরিবহণ বন্ধ থাকায় বাইরের পার্টি আসতে পারছেন না। বিপুল অংকের এই পশু সম্পদ নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছি।

দুম্বাসহ এসব সুন্দর প্রাণি প্রতিপালনে তেমন কষ্ট নেই এবং অসুখ-বিসুখ কম হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। এর আগে দেশের সবখানেই তিনি দুম্বা সরবরাহ করছেন এবং বছরে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা লাভ থাকে বলে পুনরায় উল্লেখ করেণ।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: রফিকুল ইসলাম দুম্বা পালন অত্যন্ত লাভজনক জানিয়ে বলেন,‘ মরু অ লের প্রাণি হলেও আমাদের পরিবেশগত কোন সমস্যা নেই। চরা ল দুম্বা প্রতিপালনের জন্য উপযোগী জানিয়ে তিনি আরো জানান, ঘাস খাওয়ার পাশাপাশি কিছু দানাদার খাদ্যের কারণে দুম্বা পালনে খরচ কম হয়। এটি একটি লাভজনক ব্যবসা।’