পাবনায় করোনায় আরো ৬ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৩৫

পাবনায় করোনায় আরো ৬ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৩৫

পাবনায় করোনায় আরো ৬ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৩৫

পাবনা ২৫০-বেড জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে হাসপাতালটি করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে চরমেভাবে হিমশিম খাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ৩৩৫ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। জেলার আড়াইশ’ শয্যার এই হাসপাতালটির ১০০ শয্যার করোনা ইউনিটে বর্তমানে ১১৮ জন রোগী ভর্তি আছেন। অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে আরো ৪০ জন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার সকাল আট থেকে বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই ) সকাল আটটার মধ্যে এই ৬ জন মারা গছেন বলে  হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান।এদিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্স সংকটের কারণে করোনভ রোগীদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালটি চরমভাবে হিমশিম খাচ্ছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে আরো ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করার কাজ চলছে। পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সালেহ মোহাম্মদ আলী বলেন, করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় প্রতিদিন বাড়ছে নতুন রোগী। তিনি বলেন, করোনা রোগীদের জন্য শয্যা সংখ্যা বাড়াতে ইতোমধ্যে হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগ হাসপাতালের নার্সিং ইউনিটে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

এদিকে হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ সামলাতে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হলেও হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা দিতে অতিরিক্ত চিকিৎসক না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।ডা. সালেহ মোহাম্মদ জানান, মাত্র ১০ জন ডাক্তার দিয়ে শিফটিং ডিউটি করে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অতিরিক্ত শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হলেও নতুন করে কোনো ডাক্তার না পাওয়ায় সীমিত সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে বিপুল পরিমান রোগীর সেবা দিতে আরও হিমশিম খেতে হবে।

তিনি আরও জানান, অতিরিক্ত রোগীর করোনা চিকিৎসার জন্য ৩৬ জন ডাক্তার ও ৮০ জন নার্সের চাহিদা দেয়া হলেও এখনও কোনো ডাক্তার নিয়োগ পাওয়া যায়নি। তবে ৬৩ জন নতুন নার্স নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।এদিকে করোনা রোগীদের জন্য হাই ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখনও শেষ হয়নি হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের কাজ। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

ডা. সালেহ মোহাম্মদ জানান, করোনায় যে তিন জন মারা গেছেন সবাই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় হাসপাতালে এসেছিলেন, তাদের অক্সিজেন লেভেল অনেক নিচে থাকায় করার কিছুই ছিল না।পাবনা জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় পাবনায় আরো ৩৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া, গত এক সপ্তাহে শনাক্ত হয়েছে ১,৮৮৪ জনের।  ২৪ ঘন্টায় সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ।

সরকারি হিসেব মতে জেলায় এ পর্যন্ত ৩০ জন মারা গেছেন। তবে বেসরকারি হিসেবে এর চেয়ে অনেক বেশি। গত ৩৬ ঘন্টায় একজন রাশিয়ান নাগরিক, একজন কলেজ ছাত্রী ও একজন ডাক্তারসহ ১২ জন মারা গেলেও  মারা এ হিসেব সিভিল সার্জন দপ্তরের পরিসংখ্যানে নেই।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন,‘হাসপাতালে ভর্তিকৃত কোন করোনা রোগী মারা গেলে কেবল  সেইগুলো তাদের রেকর্ডে থাকে’। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে করোনা বা উপসর্গে মৃত্যের পরিসংখ্যান তাদের কাছে থাকে না বলেই মৃত্যের সংখ্যা গড়মিল হয়ে থাকে বলে সিএস জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক করোনা রোগীর চিকিৎসা দিতে করোনা ইউনিটের শয্যা সংখ্যা ১০০ এর স্থলে ২০০ শয্যা বাড়ানোর কাজ চলছে জেনারেল হাসপাতালে’।