চাঁদ থেকে ফিরেও কাস্টমসের লাইনে আর্মস্ট্রং-অলড্রিনরা

চাঁদ থেকে ফিরেও কাস্টমসের লাইনে আর্মস্ট্রং-অলড্রিনরা

ছবি : সংগৃহীত

বিমানবন্দরে কাস্টমসের লাইনের কথা অনেকেই জানেন। ভিন দেশ বা রাজ্য থেকে কোনো পণ্য আনলে প্রয়োজন শুল্কদপ্তরের ছাড়পত্র। কিন্তু, সেই দেশ যদি হয় চাঁদের বুড়ির! ধূসর, শব্দহীন, নিকষ অন্ধকারে মোড়া এক অজানা চরাচর। সেখান থেকে ফিরলেও কী লাইন দিতে হবে কাস্টমসে?

উদ্ভট মনে হলেও এই প্রশ্নের জবাব, হ্যাঁ। চাঁদের তল্লাটে প্রথম পা রাখা ব্যক্তিদেরও আর পাঁচজন সাধারণ বিমানযাত্রীদের মতো সই করতে হয়েছিল কাস্টমসের ফর্মে। সে আজ থেকে ৫২ বছর আগের কথা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে এলো ওই ফর্মের ছবি। সৌজন্যে চন্দ্রপৃষ্ঠে পা রাখা দ্বিতীয় মহাকাশচারী এডউইন ‘বাজ’ অলড্রিন।

তারিখটা কয়েক দিন আগের, ২৪ জুলাই। সাল ১৯৬৯। চন্দ্রবিজয় করে সবে ফিরেছেন ‘অ্যাপোলো ১১’-র তিন মহাকাশচারী— নীল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স। ৮ দিনের মহাকাশযাত্রা। মাঝে ২০ জুলাই প্রায় ২২ ঘণ্টা কেটেছে চাঁদে। উত্তেজনা ও ধকলে কাবু তিনজনে। কিন্তু, সরকারি নিয়ম বড় বালাই! পৃথিবীতে নামার পর কোথায় তাদের সংবর্ধনা দেয়া হবে, তা নয় যেতে হল কাস্টমসের লাইনে। সেখান থেকে ফিরে এসে তারপর ফুল-মালার পালা।
এত দিন পর সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই ট্যুইটারে রসিকতা করেছেন ‘অ্যাপোলো ১১’-র চালক অলড্রিন। লিখেছেন, ‘একবার ভাবুন, আটদিন আমরা মহাকাশে কাটিয়েছি। প্রায় ২২ ঘণ্টা চাঁদে ছিলাম। বাড়ি মানে পৃথিবীতে ফিরেছিলাম কেবল কাস্টমসে যেতে হবে বলে।’

সাথে দেয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে ‘জেনারেল ডিক্লারেশন’ শীর্ষক ফর্মটি। সেখানে জ্বলজ্বল করছে কোথা থেকে তারা আসছেন সেই নাম- চাঁদ। সঙ্গে মালপত্রের বিবরণ, ‘মুন রক অ্যান্ড মুন ডাস্ট স্যাম্পলস’ (চাঁদের পাথর এবং ধুলোর নমুনা)। আর্মস্ট্রং, অলড্রিন ও কলিন্স তিনজনেরই সই রয়েছে তাতে।

উল্লেখ্য, কলিন্স চাঁদে পা রাখেননি। ২০০৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন ওয়েবসাইটে এ ফর্মটি প্রকাশ করা হয়েছিল।

চেনাজানা ইতিহাসের মধ্যে লুকিয়ে থাকা টুকরা মজার খোরাক চোখ এড়ায়নি নেটিজেনদের। অলড্রিনের এই ট্যুইট এখন ভাইরাল। নানা টিপ্পনিও উড়ে এসেছে। একজন বলেছেন, ‘কিছু জিনিস ইতিহাসের থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, পেপারওয়ার্ক। ওঁরা এই ফর্ম পূরণ না করলে কি হতো? মহাকাশে ফেরত পাঠিয়ে দিত?’ কারো আবার ঠাট্টা, ‘এসব আসলে মহাকাশচারীদের অটোগ্রাফ সংগ্রহের কায়দা।’

এমন কাণ্ডকারখানা উস্কে দিয়েছে মহাকাশপ্রেমীদের কৌতূহলও।

সূত্র : বর্তমান