পিএসজির হয়ে মেসির প্রথম গোল

পিএসজির হয়ে মেসির প্রথম গোল

আর্জেন্টাইন সুপারস্টার লিওনেল মেসি

পিএসজির জার্সি গায়ে অবশেষে গোলের দেখা পেয়েছেন লিওনেল মেসি। কিলিয়ান এমবাপ্পের সহায়তায় দুর্দান্ত এক গোলের মাধ্যমে মেসি ফরাসি ক্যারিয়ারে গোলের খাতা খোলার সাথে সাথে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে জয়ও উপহার দিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে মঙ্গলবার গ্রুপ-এ’র গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পিএসজি ২-০ব্যবধানে  সিটিকে পরাজিত করে ক্লাব ব্রাগাকে  গোল ব্যবধানে পিছনে ফেলে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে।

এই গোলটি ছিল সাবেক কোচ পেপ গার্দিওলার বিপক্ষে মেসির প্রথম গোল। ৭৪ মিনিটে নিজেদের রক্ষণ থেকে বল কুড়িয়ে সামনে দৌঁড়ানো শুরু করেন ইতালিয়ান মিডফিল্ডার মার্কো ভেরাত্তি। কিছুদূর এগিয়ে ডানে থাকা মেসির উদ্দেশ্যে পাস বাড়িয়ে দেন। বল পেয়ে ডান প্রান্ত থেকে ধীরে ধীরে মাঝখানে চলে  আসেন মেসি। মেসিকে মাঝখানে রেখে দ্রুত গতিতে ডান দিক দিয়ে দৌঁড়ে যান রাইটব্যাক আচরাফ হাকিমি। এটি ছিল হাকিমির ডামি রান।

মেসিকে আসতে দেখে ডিবক্সে দৌঁড়ে স্ট্রাইকিং পজিশনে চলে যান কিলিয়ান এমবাপ্পে। এমবাপ্পেকে দেখে পাস দেন মেসি। তবে নিজে গোল না করে দুর্দান্ত এক ব্যাকহিলে মেসিকে আবার সেই পাস ফেরত পাঠান এমবাপ্পে। বল পেয়েই বক্সের একটু বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে মেসি পরাস্ত করেন ম্যানচেস্টার সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসনকে।

 ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত মেসি বলেছেন, ‘শেষ পর্যন্ত গোল করতে পেরে আমি দারুন খুশী। সম্প্রতি ইনজুরির কারনে আমি খুব বেশী খেলতে পারিনি। ধীরে ধীরে আমি সতীর্থদের সাথে মানিয়ে নেয়া শুরু করেছি। যত বেশী আমরা একসাথে খেলবো ততই এই কাজগুলো সহজ হয়ে যাবে। আমাদের একসাথে সামনে এগিয়ে যাওয়াটা জরুরী।’

বার্সেলোনার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে মেসি ৬৭২ গোলের রেকর্ড গড়লেও চার ম্যাচে পিএসজির হয়ে এটাই তার প্রথম গোল। মেসির সাবেক বস গার্দিওলা বলেছেন, ‘গোলটি অসাধারণ ছিল।’
মেসি ও গার্দিওলা মিলে ২০০৯ ও ২০১১ সালে বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছেন। ঐ দুই আসরের ফাইনালেই মেসি গোল করেছিলেন।  

এর আগে পাঁচবারের মোকাবেলায় একবারও পরাজিত হয়নি সিটি। গত মৌসুমে সেমিফাইনালের দুই লেগে প্যারিসে ২-১ গোলে ও ঘরের মাঠে পিএসজিকে ২-০ গোলে পরাজিত করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সিটিজেনরা। কিন্তু অল-ইংলিশ ফাইনালে প্রিমিয়ার লিগের আরেক জায়ান্ট চেলসির কাছে পরাজিত হয়ে প্রথমবার ফাইনালে খেলার দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে পারেনি গার্দিওলার শিষ্যরা। 

মেসি, নেইমার ও এমবাপ্পেকে নিয়ে সাজানো তারকা সমৃদ্ধ আক্রমনভাগ নিয়েই কাল মাঠে নেমেছিল পিএসজি। কিন্তু পার্ক ডি প্রিন্সেসে ৮ মিনিটে মিডফিল্ডার ইদ্রিসা গুয়ের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ডানদিক থেকে এমবাপ্পের ক্রসে সেনেগালের এই মিডফিল্ডার দারুন এক গোল করে পিএসজিকে লিড এনে দেন। ২৬ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার ক্রস থেকে রাহিম স্টার্লিংয়ের হেড ক্রসবারে লেগে ফেরত আসলে সমতায় ফেরা হয়নি সিটির। বলটি দুই মিটার দূরত্বে থাকা বার্নান্ডো সিলভার কাছে গেলেও তার থেকে গোলরক্ষক গিয়ানলুইগি ডোনারুমাকে পরাস্ত করতে পারেননি এই পর্তুগীজ মিডফিল্ডার। এরপর ডোনারুমা ও এডারসন উভয়ই দুটি ভাল সেভ করে নিজ নিজ দলকে রক্ষা করেন। 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্টার্লিং পিএসজির রক্ষনভাগের ভুলকে কাজে লাগাতে পারেননি। ৬৪ মিনিটে ডি ব্রুইনার শট রুখে দেন ডোনারুমা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম ম্যাচে ক্লাব ব্রাগার সাথে ১-১ গোলে ড্র করে পয়েন্ট হারিয়েছিল পিএসজি। ঐ ম্যাচেও পিএসজির আক্রমনভাগ নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। কালকের ম্যাচে নেইমার ও এমবাপ্পে একের পর এক সুযোগ হাতছাড়া করে পিএসজির ব্যবধান বাড়াতে দেয়নি। তবে মেসি কাল আর কোন ভুল করেননি। এই মাঠেই গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বার্সেলোনার হয়ে গোল করেছিলেন মেসি।

আগামী ১৯ অক্টোবর সিটি ব্রাগাকে ও লিপজিগ পিএসজিকে আতিথ্য নিবে।

সূত্র: বাসস