আফগানিস্তানও এখন ভারতের কঠিন প্রতিপক্ষ

আফগানিস্তানও এখন ভারতের কঠিন প্রতিপক্ষ

আফগানিস্তানও এখন ভারতের কঠিন প্রতিপক্ষ

হাতি যখন কাদায় পড়ে/ চামচিকেতে লাথি মারে’। সেই অবস্থা এখন বিরাট কোহলিদের। সুপার টুয়েলভে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে টি-২০ বিশ্বকাপ অভিযান কার্যত শেষ টিম ইন্ডিয়ার। ক্রিকেটারদের মনোবল একেবারে তলানিতে। অবিশ্বাস জন্ম নিয়েছে দলের অন্দরে।

এই পরিস্থিতিতে আজ বুধবার আফগানিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে ভারত। লড়াইটা হতে পারত ডেভিড আর গোলিয়াথের মতো। পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলছে। এই ফরম্যাটে দু’বারের সাক্ষাতে শেষ হাসি হেসেছে ভারতই। কিন্তু মরুদেশের মহারণে প্রথম দু’টি ম্যাচে কোহলি বাহিনীর অসহায় আত্মসমর্পণ দেখার পর সমর্থকরা হাল ছেড়ে দিয়েছেন। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে ‘মেন ইন ব্লু’র। কোণঠাসা ভারতের কাছে আফগানিস্তানও এখন কঠিন প্রতিপক্ষ।

ভুলে ভরা রণকৌশল, দুর্বল নেতৃত্ব, কোচের খামখেয়ালিপনা, আত্মতুষ্টি এবং প্রথম একাদশ চয়নের গাফিলতি টিম ইন্ডিয়ার ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। এই ভুল শুধরে নিতে না পারলে আফগানদের বাধা টপকাতেও কালঘাম ছুটবে কোহলিদের। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যাটিং অর্ডার বদলে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তাই রোহিত শর্মাকে ফের ওপেন করতে দেখা যেতে পারে। তার সঙ্গী হতে পারেন বাঁহাতি ঈশান কিষান। যদিও দু’জনেই ছন্দে নেই। যার ফলে টপ অর্ডার চাপে পড়ে যাচ্ছে। ‘হিটম্যান’এর ব্যাটে রানের খরা দেখে বিস্মিত ক্রিকেট দুনিয়া। মরুদেশের পিচে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ‘হামাগুড়ি’ দিতে দেখে উঠছে প্রশ্ন, তাহলে আইপিএল খেলে কি লাভ হলো?

বিরাট কোহলির টস ভাগ্য একেবারে ভালো নয়। যার ফল বারবার ভুগতে হয়েছে দলকে। আবুধাবির পিচ বেশ মন্থর। বড় স্কোরের আশা কম। পড়ছে শিশির। তাই টস এই ম্যাচেও বড় ফ্যাক্টর। কারণ, বিপক্ষ দলে রয়েছেন রশিদ খান, মুজিব-উর-রহমান, মহম্মদ নবির মতো তারকা স্পিনার। তাদের সামনে রেখেই অঘটনের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান। তাই সতর্ক থাকতে হবে কোহলিদের। সামান্য ভুল মানেই পদস্খলন। টপ অর্ডারের মতো ব্যর্থ ভারতের মিডল অর্ডারও। সেই খামতি মেটাতে হয়তো লোকেশ রাহুলকে চার নম্বরে ঠেলে দেওয়া হতে পারে। যদিও দু’টি ম্যাচেই বড় রান পাননি তিনি। ঋষভ পন্থও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। বর্ষীয়ান স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে না খেলানো নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের কড়া সমালোচনা করেছিলেন সুনীল গাভাসকর। অশ্বিন হয়তো প্রথম একাদশে থাকবেন। সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন বরুণ চক্রবর্তী। ভারতের পেস ব্যাটারিও হতাশ করেছে। যশপ্রীত বুমরাহ ছাড়া আর কারও পারফরম্যান্সই পাতে দেওয়ার মতো নয়।

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান শান্তি খোঁজার চেষ্টা করছে বাইশ গজে। মোহাম্মদ নবির নেতৃত্বে কাবুলিওয়ালাদের দেশ জিতেছে দু’টি ম্যাচ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারলেও দারুণ লড়েছিলেন আফগানরা। ব্যাটিংয়ের তুলনায় তাদের বোলিং বেশ শক্তিশালী। তাই ভারতকে বেগ দিতে তৈরি তারা।

তবে কোহলিরা এখন খোঁচা খাওয়া বাঘ। প্রথম জয়ের স্বাদ পেতে মরিয়া টিম ইন্ডিয়াও। কিন্তু জিতলেই তো হবে না, সেমি-ফাইনালে ওঠার ক্ষীণ আশা জাগিয়ে রাখতে জয়ের ব্যবধানেও নজর রাখতে হবে।
সূত্র : বর্তমান