চীনে স্কুল কর্মীর দেহে করোনা শনাক্ত, হুলুস্থুল কাণ্ড

চীনে স্কুল কর্মীর দেহে করোনা শনাক্ত, হুলুস্থুল কাণ্ড

চীনে স্কুল কর্মীর দেহে করোনা শনাক্ত, হুলুস্থুল কাণ্ড

চীনের একটি প্রাইমারি স্কুলে একজন কর্মীর দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলের ভেতরে কয়েক ঘণ্টার জন্য আটকে রাখা হয়। এসময় কাউকে স্কুল থেকে বের হতে এবং ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

খবর পেয়ে অভিভাবকরা স্কুলে ছুটে আসেন এবং স্কুলের সামনে জড়ো হয়ে শিশুদের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন।মধ্যরাতের দিকে তারা ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে পারেন।

পরে স্কুলের সব শিক্ষার্থীর কোভিড টেস্ট করা হয়েছে বলে জানা গেছে এবং তাদেরকে বলা হয়েছে যে টেস্টের ফল না পাওয়া পর্যন্ত তারা যেন সারা রাত স্কুলের ভেতরেই অপেক্ষা করে।শিক্ষার্থীদের বয়স সাত থেকে ১২ বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জিমু নিউজ নামের স্থানীয় একটি ওয়েবসাইটের খবর অনুসারে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে এগারোটার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাইরে এসে অপেক্ষমাণ অভিভাবকদের জানান যে কোন কোন শিশুকে কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।

এসময় অভিভাবকদেরকে শিশুদের জন্য কিছু কাপড়-চোপড় দেওয়ার কথা বলা হয়, কারণ তাদেরকে স্কুলের ভেতরে রাত কাটাতে হবে।জিমু নিউজের সাইটে বলা হয় প্রধান শিক্ষক অভিভাবকদের জানান যে পরের দিন কোভিড টেস্টের ফলাফল হাতে পাওয়ার পরেই শিশুরা বাড়ি যেতে পারবে।

স্কুলের ভেতরে ঠিক কতজন স্কুলে আটকা পড়েছিল সেটা স্পষ্ট নয়, তবে ফালুন-গং গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত নিউ টাং ডাইন্যাস্টি টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে যে শেষ পর্যন্ত ৩৫ জন শিক্ষার্থীকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে স্কুলের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের কোভিড টেস্ট করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।স্কুলটি আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রায় দু'বছর আগে করোনাভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর থেকেই চীনে কঠোরভাবে জিরো-কোভিড নীতি (করোনাভাইরাস পুরোপুরি নির্মূল করা) অনুসরণ করা হচ্ছে।এই নীতিতে কোন ধরনের পরিবর্তন হয়েছে বলেও মনে হচ্ছে না।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চীনে যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে কঠোর লকডাউন, সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া যা অনেক পশ্চিমা দেশের গৃহীত পদক্ষেপের বিপরীত।এমনকি এশিয়ার অনেক দেশেও এখন ধীরে ধীরে সবকিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মতো কিছু দেশ প্রাথমিকভাবে ভাইরাসটিকে পুরোপুরিভাবে নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল কিন্তু পরে তারা এই অবস্থান থেকে সরে গিয়ে করোনাভাইরাসের সঙ্গে বসবাসের নীতি গ্রহণ করেছে।

তবে চীন কতদিন পর্যন্ত ভাইরাস নির্মূলে তাদের এই নীতি ধরে রাখতে পারে তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন।এর আগে চীন স্বীকার করেছে যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য উইন্টার অলিম্পিকসের জন্য এই ভাইরাস এখনও "বড় চ্যালেঞ্জ" হিসেবে রয়ে গেছে।

সূত্র : বিবিসি