ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ড্রোন হামলা

ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ড্রোন হামলা

ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ড্রোন হামলা

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাজেমিকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। রোববার রাজধানী বাগদাদে তার বাসভবনে বিস্ফোরক ভর্তি একটি ড্রোন হামলার মাধ্যমে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।

মোস্তফা আল-কাজেমি হামলা থেকে বেঁচে গেলেও নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর ছয় সদস্য হামলায় আহত হয়েছেন।এদিকে ঘটনার জেরে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী এক টুইট বার্তায় সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

টুইট বার্তায় তিনি বলেন, 'আল্লাহর রহমতে আমি ভালোই আছি এবং জনগণের সাথেই আছি। ইরাকের ভালোর জন্য আমি সবাইকে শান্ত থাকার ও ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি।'

পরে ইরাকি টেলিভিশনে এক ভাষণ দেন তিনি। সাদা শার্ট পরা মোস্তফা আল-কাজেমি শান্ত ও স্থিরভাবেই ভাষণ দেন।ভাষণে তিনি বলেন, 'ভীরুর মতো রকেট ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে দেশ গঠন হতে পারে না এবং ভবিষ্যতও তৈরি হতে পারে না।'বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোনে ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এই হামলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি।

ইরাকি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরক ভর্তি ড্রোন হামলা করা হলেও প্রধানমন্ত্রী সুস্থ রয়েছেন।এতে বলা হয়, 'ব্যর্থ এই হামলার যোগসূত্র সন্ধানে নিরাপত্তা বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।'

গত ১০ অক্টোবর ইরাকে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে শুক্রবার বাগদাদে মোস্তফা আল-কাজিমির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের পরই ইরাকি প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার এই চেষ্টা করা হলো।

ইরান সমর্থিত ইরাকের শিয়া রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনে তাদের পরাজয়ের জেরে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে এই বিক্ষোভ করে। তাদের দাবি, নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও গণনায় অনিয়ম করা হয়েছে।শুক্রবারের বিক্ষোভে নিরপত্তা বাহিনীর সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।

এদিকে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার ইরাক প্রতিনিধি বাগদাদ থেকে জানিয়েছেন, বাগদাদের বাসিন্দারা ভোরে গ্রিনজোন থেকে বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনে। ঘটনার জেরে নগরীর সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হাশদ আল-শাবি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে 'হত্যার চেষ্টা সন্দেহপূর্ণ। বিক্ষোভকারীদের ওপর দোষ চাপাতেই সরকার এই নাটক সাজিয়েছে।'

গত ১০ অক্টোবর ইরাকে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ৩২৯ আসনে প্রভাবশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সদরের সদর মুভমেন্ট ৭৩ আসনে জয়লাভ করে। ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখলেও ইরাকের ওপর ইরানসহ বাইরের যেকোনো দেশের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছেন মুকতাদা আল-সদর।

অপরদিকে ইরানপন্থী ফাতাহ অ্যালায়েন্স মাত্র ১৫টি আসনে জয়লাভ করে।২০১৯ সালের অক্টোবরে ইরাকে জীবনমানের উন্নতি ও কর্মসংস্থানের দাবি এবং দুর্নীতির অভিযোগে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভের জেরে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আদেল আবদুল মাহদি সরকারের পতন হলেও বিক্ষোভকারীরা তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে। এর জেরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিক্ষোভকারীদের বিভিন্ন দাবি পালনের প্রতিশ্রুতি দেয়। এর অংশ হিসেবেই আগাম এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্র : আলজাজিরা