স্ব-স্ত্রীক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আবারও দুদকের মামলা, কারাগারে প্রেরন
স্ব-স্ত্রীক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে আবারও দুদকের মামলা
কুষ্টিয়া প্রতনিধি: দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির আঁতুরঘর খ্যাত কুষ্টিয়া পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম(৫৫)র বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদকের করা মামলায় জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত।
বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ (বিশেষ জজ) আদালতের বিচারক আশরাফুল ইসলাম এর আদালতে জামিন আবেদন করলে শুনানী শেষে আদালত নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের জামিন না মঞ্জুর করেন। এর আগে উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিনে থাকায় এই মামলার অপর আসামী নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামের স্ত্রী কুষ্টিয়া ইসলামীয়া কলেজের শিক্ষক মোছা: কামরুন্নাহার(৪৫)র জামিন শুনানী হবে আগামী ১৪নভেম্বর।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের দায়ে দূর্ণীতির অভিযোগ এনে তাদের বিরুরেদ্ধ মামলা করেছিলেন সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সজেকা কুষ্টিয়া। এমামলায় উচ্চ আদালতে জামিনাবেদন করলে শুনানী শেষে গত ৩ অক্টোবর উচ্চ আদালতের বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও কে এম জাহিদ সরওয়ার এর বেঞ্চ নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলামকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন এবং তার স্ত্রী মোছা: কামরুন্নাহাকে ৬ সপ্তাহের জামিন মনঞ্জুরসহ ৬সপ্তাহের মধ্যে নি¤œ সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতে জামিনাবেদনের নির্দেশ দেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ থেকে।
এমামলায় এজাহারভুক্ত আসামীগণ হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা বর্তমান ঠিকানা হাউজিং ডি ব্লক ৭৯ নং ভবনের বাসিন্দা এবং কুষ্টিয়া পৌরসভায় কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম(৫৫) ও তার স্ত্রী কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের শিক্ষক মোছা: কামরুন্নাহার(৪৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ০১অক্টোবর হতে ২০১৯ সালের ২ ডিসেম্বর সময়কালে কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ও স্ত্রী কামরুন্নাহার জ্ঞাত আয় বহির্ভুত ৫২লক্ষ ১৬হাজার ৫শ ৭৩টাকার সম্পদ অর্জন করেন। অপর মামলায় ২০০৪ সালের ১০অক্টোবর হতে ২০১৯ সালের ৪নভেম্বর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে কুষ্টিয়া পৌরসভায় কর্মরত সার্ভেয়ার আব্দুল মান্নানের স্ত্রী রূপালী খাতুন ৭২লক্ষ ৩২হাজার ৬শ ৪৮টাকার সম্পদ অর্জন করেন এবং অন্যান্য সম্পদ বিভিন্ন জনের কাছে হস্তান্তর ও রূপান্তরসহ স্থানান্তর করে ২০০৪ সালের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২র ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অপরাধ সংগঠনসহ দ:বি: ১০৯ ধারার অপরাধ করেন।
এদিকে বৃহষ্পতিবার বিকেলে একই দ:বি:তে আবারও কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী কামরুন্নাহারের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আই বহির্ভুত প্রায় এক কোটি টাকার সম্পদ আহরণ করার দুর্ণীতি ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করেছেন সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সজেকা কুষ্টিয়া। কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ বিশেষ আদালতের বিচারক শেখ আবু তাহের এর আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী সপ্তাহে শুনানীসহ আদেশের দিন ধার্য করেন বলে নিশ্চিত করেছেন দুদকের কৌশুলী এ্যাড: আল মুজাহিদ হোসেন মিঠু।
সমন্বিত জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সজেকা কুষ্টিয়ার কৌশুলী এ্যাড মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুদকের সব মামলাই চুড়ান্ত ভাবে আদালতে দাখিলের পূর্বে নিবির পর্যবেক্ষন ও বিচক্ষনতার সাথে তদন্তকারী কর্মকর্তারা তদন্ত করেন। শুধুমাত্র যেসব ক্ষেত্রে তদন্তে সত্যতা আছে বলে প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হয় সেগুলিই চুড়ান্ত মামলা হিসেবে আদালতে দাখিল করা হয়। এই মামলার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। বুধবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালত আগামী সপ্তাহে শুনানী অন্তে আদেশের দিন ধার্য করা হবে বলে আদেশ দেন। আদালতের আদেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন সংশ্লিষ্ট দুদক কর্মকতারা।