করোনা মোকাবেলায় জার্মানিতে আরো কড়াকড়ি

করোনা মোকাবেলায় জার্মানিতে আরো কড়াকড়ি

করোনা মোকাবেলায় জার্মানিতে আরো কড়াকড়ি

বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের মুখে জার্মানির একাধিক রাজ্য আজ সোমবার থেকে নতুন বিধিনিয়ম দেয়া হচ্ছে। এদিকে করোনা টিকাদান কর্মসূচি একাধিক সমস্যার মুখে পড়ায় বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

দেশজুড়ে বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে সোমবার থেকে জার্মানির একাধিক রাজ্যে নতুন করে কড়াকড়ি শুরু হলো। তবে করোনাভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ সামলাতে জার্মানি হিমসিম খাচ্ছে। বেলাগাম সংক্রমণের পাশাপাশি কোভিড রোগীর কারণে হাসপাতাল ভরে যাওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। বিশেষ করে পূর্বে স্যাক্সনি ও দক্ষিণের বাভেরিয়া রাজ্যের অবস্থা সবচেয়ে গুরুতর। প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে সাপ্তাহিক গড় সংক্রমণের হার সোমবার ৩৮৬ অতিক্রম করেছে।

জার্মানির ফেডারেল কাঠামোর কারণে দেশজুড়ে একই বিধিনিয়ম না থাকায় যথেষ্ট বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে। রাজ্য ও জেলা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। মূলত সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা না নেয়া মানুষের গতিবিধি ও প্রবেশাধিকার সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। তবে সেই সব কড়া নিয়ম কার্যকর করার ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে।

জার্মানির অবশিষ্ট মানুষকে করোনা টিকা দিতে নতুন উদ্যোগও শুরু হচ্ছে। চাপে পড়ে কিছু মানুষ বাধ্য হয়ে টিকা নিতে শুরু করেছেন। সেই সাথে টিকার সব প্রয়োজনীয় ডোজ পাওয়া মানুষের জন্য ছয় মাস পর বুস্টার ডোজ দিতেও প্রশাসন নড়েচড়ে বসছে। তবে দেশের অনেক প্রান্তে টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়ায় এই উদ্যোগ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

এরই মধ্যে ফেডারেল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্ত বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ সৃষ্টি করছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী আপাতত মডার্না কোম্পানির টিকা অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ সেগুলো ব্যবহারের শেষ তারিখ এগিয়ে আসছে। বায়োনটেক-ফাইজার কোম্পানির টিকা সীমিতভাবে সরবরাহ করে সেটা সম্ভব করতে চায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিপুল চাহিদার মুখে বায়োনটেকের মজুদও কমে আসছে। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এর ফলে সার্বিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির গতি আরো কমে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন।

উল্লেখ্য, জার্মানির টিকা কমিশন একমাত্র ৩০ বছরের বেশি মানুষের জন্য মডার্না কোম্পানির টিকা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। সোমবার জার্মানির রাজ্যগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন।

এমন অবস্থায় বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান প্রবল চাপের মুখে পড়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তিনি মরিয়া হয়ে স্বীকার করেছেন, যে বাড়তি চাহিদার মুখে বায়োনটেক কোম্পানির যথেষ্ট পরিমাণ টিকা না থাকায় তিনি নিরুপায়। স্পান বলেন, তার মন্ত্রণালয় মোটেই এই টিকা আটকে রাখছে না। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, সোমবারই ৬০ লাখ ডোজ সরবরাহ করা হবে। তবে গোটা বিষয়টি আরো ভালোভাবে খুলে বোঝানো উচিত ছিল বলে স্পান স্বীকার করেন।

সূত্র : ডয়চে ভেলে