'হালাল' বিতর্কে বিদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেট

'হালাল' বিতর্কে বিদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেট

বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি।

বৃহস্পতিবার থেকে কানপুরে শুরু হচ্ছে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ। তার আগে হালাল বিতর্কে জেরবার বিসিসিআই।একদিন আগে সংবাদসংস্থা পিটিআই খবর করেছে যে, ভারতীয় টিমের ড্রেসিং রুমের খাদ্যতালিকায় গরু বা শূকরের মাংস থাকবে না। বাকি সব মাংসই হালাল হবে। এরপরই শুরু হয়েছ জোরদার বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে, কেন শুধু হালাল মাংস থাকবে?

বিসিসিআই-এর কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধূমল বলেছেন, এরকম কোনো নির্দেশের কথা তার জানা নেই। ক্রিকেটাররা কী খাবেন, তা বিসিসিআই ঠিক করে না।  ক্রিকেটাররা তাদের ইচ্ছামতো খাবার খান।পিটিআই অবশ্য রিপোর্টে দাবি করেছে, তাদের কাছে পুরো মেনু আছে। সেখান বলে দয়া হয়েছে, গরু বা শূকরের মাংস দেয়া হবে না। বাকি মাংস শুধু হালাল থাকবে। হিন্দু ও শিখরা ঝটকা মাংস পছন্দ করেন। ঝটকা মানে এক ঝটকায় পশুকে কাটা হয়। আর মুসলিমরা হালাল মাংস খান।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্রিকেটারদের জন্য মেনুতে মাংসের মধ্যে রয়েছে চিকেন ও ল্যাম্ব।  আমিষ পদের মধ্যে আছে, রোস্টেড টিকেন, রোস্টেড ল্যাম্ব, ব্ল্যাক পেপার সসের সঙ্গে ল্যাম্ব, মুর্গ ইয়াখনি, চিকেন থাই কারি, গ্রিলড চিকেন, গোয়ান ফিশ কারি, টাংরি  কাবাব, চিকেন ইন গার্লিক সস উইথ ভেজিটেবলস।

বিতর্ক শুরু

সংবাদসংস্থার এই খবর অধিকাংশ সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। টিভি-তে দেখানো হয়। শুরু হয় হইচই। নেটিজেনরা সোচ্চার হন। বিজেপি-র মুখপাত্র গৌরব গোয়েল টুইট করে বলেন, ''ক্রিকেটারেরা তাদের ইচ্ছামতো খাবার খেতে পারেন। কিন্তু তাই বলে বিসিসিআই-কে শুধু হালাল মাংস রাখার অধিকার কে দিয়েছে? এটা বেআইনি এবং আমরা কিছুতেই এটা করতে দেব না।''নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক ক্রিকেটার জানিয়েছেন, তার সময়েও ভারতের ড্রেসিং রুমে গরু ও শূকরের মাংস মেনুতে থাকত না। তবে তা লিখিতভাবে বলা থাকত না। ক্রিকেটারদের বলা হত, চর্বিহীন আমিষ খেতে। তার মানে মুরগি ও মাছ খেতে।

বিসিসিআই যা বলেছে

বিসিসিআই-এর একাধিক কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল পিটিআই। কিন্তু কেউ মুখ খোলেননি।অবশ্য ইন্ডিয়া টুডে-কে বিসিসিআই-এর কোষাধ্যক্ষ অরুণ ভগত বলেছেন, ''ক্রিকেটারেরা কী খাবেন তা নিয়ে বিসিসিআই কখনো আলোচনা করে না। কখনো এরকম সিদ্ধান্ত কার্যকর করে না। আমি জানি না, কবে এই সিদ্ধন্ত নেয়া হয়েছে বা আদৌ নেয়া হয়েছে কিনা।'' তিনি বলেছেন, ''আমি যতদূর জানি, আমরা ক্রিকেটারদের খাদ্যতালিকা নিয়ে কখনো কোনো নির্দেশ দিইনি। কে কী খাবেন, সেটা একান্তভাবেই ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত বিষয়। সেখানে বিসিসিআই-এর কোনো ভূমিকা নেই।''

অরুণ বলেছেন, ''হতে পারে, এই হালালের বিষয়টি কোনো ক্রিকেটারের কাছ থেকে ফিডব্যাক পেয়ে কোনো এক সময়ে করা হয়েছে। যেমন ধরুন, কোনো ক্রিকেটার বলতে পারেন, তিনি গরুর মাংস খান না। যদি কোনো বিদেশি দল আসে, তাহলে খাবার যেন মিশিয়ে দেয়া না হয়।'' কোষাধ্যক্ষ বলেছেন, হালালের বিষয়টি আগে কখনো বিসিসিআই-এর গোচরে আসেনি।অরুণ বলেছেন, ''বিসিসিআই কখনো প্লেয়ারদের কী খেতে হবে তা বলে না। এটা ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভর করে। কেউ আমিষ পছন্দ করতে পারেন, কেউ নিরমিষ, আবার কেউ ভেগান হতে পারেন।''

সূত্র : ডয়েচে ভেলে ।