পাকিস্তানে ভারী তুষারপাতে গাড়িতে আটকা পড়ে মৃত্যু বেড়ে ২১

পাকিস্তানে ভারী তুষারপাতে গাড়িতে আটকা পড়ে মৃত্যু বেড়ে ২১

ফাইল ছবি

পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ভারী তুষারপাতে সড়কে গাড়ির মধ্যে আটকে পড়ে ২১ জন মারা গেছেন।

পাহাড় চূড়ার শহর মুরিতে শীতকালীন তুষারপাত দেখতে আসা বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমনে সেখানকার সড়কে প্রায় এক হাজারের মত যানবাহন আটকা পড়ে।

স্থানীয় জরুরি পরিষেবা রেসকিউ ১১২২ বলছে, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য, তার স্ত্রী এবং তাদের ছয় সন্তান এবং আরেকটি পরিবারের পাঁচজনের সদস্য রয়েছেন।

দেশটির সামরিক বাহিনী রাস্তা থেকে বরফ সরানো এবং আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ বলেছেন, রাজধানী ইসলামাবাদের উত্তরে ওই এলাকায় ভ্রমণকারীর সংখ্যার বেড়ে যাবার কারণে এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

ঔপনিবেশিক যুগের ওই শহরটিতে সাম্প্রতিক কয়েক দিনে এক লাখেরও বেশি গাড়ি আসে পর্যটক নিয়ে, পাকিস্তানের সামাজিক মাধ্যম উপচে পড়ছিল তুষারপাত উপভোগের ছবি দিয়ে।

তবে শুক্রবার নাগাদ, স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিতে শুরু করে যে পর্যটকরা রাস্তায় আটকা পড়ছেন।

শনিবার, ভারী তুষারপাত এবং যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ অঞ্চলটিকে একটি দুর্যোগপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করতে বাধ্য হন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্ট করা ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আটকা পড়া গাড়িগুলোর একটির বাম্পারের সাথে আরেকটির বাম্পার ঠেকে আছে, তাদের ছাদে তুষারের পুরু স্তর জমে আছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০জন শিশুসহ এ পর্যন্ত মোট ২১জন মারা গেছেন।

পুলিশ বলছে, ঠাণ্ডায় জমে অন্তত ছয়জন মানুষ গাড়ির মধ্যে মারা গেছেন।

বাকিরা ধোঁয়ার কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যেতে পারেন এমন সম্ভাব্য কারণ চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

শহরে এখনও ভারী তুষারপাত হচ্ছে। সেখানে আটকে পড়া একজন পর্যটক উসমান আব্বাসি ফোনে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, "মানুষ এখানে এক ভয়ানক পরিস্থিতির মুখোমুখি। এতে কেবল পর্যটকেরাই নয়, স্থানীয় মানুষেরাও গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।"

সেই সাথে শহরে এখন গ্যাস ও পানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

আটকে পড়া মানুষদের জন্য কম্বল এবং খাবার নিয়ে সাহায্য করছে স্থানীয় মানুষেরা।

আর যারা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে সাত হাজার ফুট ওপরের শহরটিতে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছেন, তাদের সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা এবং স্কুল ভবনে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পর্যটকদের 'মর্মান্তিক মৃত্যু'তে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন কিভাবে তুষারপাত এবং 'আবহাওয়া পরিস্থিতির খবর না নিয়ে সেখানে ছুটে আসা বিপুল মানুষের ভিড় জেলা প্রশাসনকে অপ্রস্তুত করে ফেলেছে।'

মি. খান একটি টুইটে বলেছেন, তিনি বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং এ ধরনের ট্র্যাজেডি যাতে আর না ঘটে তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছেন।

১৯ শতকে ব্রিটিশরা ঔপনিবেশিক সৈন্যদের জন্য মুরি শহরে একটি মেডিকেল বেস হিসাবে তৈরি করেছিল।

সূত্র: বিবিসি