কবির অপমৃত্যু

কবির অপমৃত্যু

কবির অপমৃত্যু-সানজিদ সৈকত

বাংলাদেশে ট্রাম চলে না,

ট্রাম চললে হয়তো কোন একদিন

গুলিস্তান থেকে উত্তরাগামী কোন ট্রামের নিচে

একটা ডেডবডি পড়ে থাকতো।

ডেডবডির শার্টের পকেটে একটা রক্তমাখা কবিতা দেখে বুঝা যেত,

এ লাশ কোন আলোচনায় না আসা কবির।

ট্রাঙ্কের ভেতর থেকে

কবিতার খাতা বেরোতো কিনা-জানা না গেলেও

জনৈক লাবণ্য দাশ যে বেঁচে যেত সুনিশ্চিত। 

ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কোন আন্তঃনগর ট্রেনের হুইসেল শুনতে শুনতে,

নগরবাসী যেদিন খবরের কাগজে দেখতো

এক যুবকের ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর খবর,

তখন কেউ কেউ আহ উহ শব্দ উচ্চারণ করলেও

পাওনাদারগুলো যে হতাশ হতো তা হলফ করে বলা যায়।

সবাই জানতো,রেললাইন পার হতে গিয়ে

কুয়াশাভেজা শীতের সকালে

অথবা মুঠোফোন ব্যবহারের 

অনিয়ন্ত্রিত কারণে

ট্রেনে কাটা পড়েছে এক যুবক।

কি আর হতো!

ঢামেকের মর্গে ময়নাতদন্তের নামে ছিন্নভিন্ন হতো শরীর,

জি আর পি থানায় একটা অপমৃত্যু মামলা,

আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামকে দিয়ে দাফন

আর পেপারে একটা নিউজ;

এইসকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে

কবির দেহ হয়ত পড়ে থাকতো 

আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানে।

কে জানতো এখানেই হবে তার চিরস্থায়ী নিবাস।

রাতবিরাতে এই কবরস্থানে যার পায়চারী ছিল।

ততদিনে লাবণ্য দাশ মধুচন্দ্রিমা শেষ করে

একটা পুত্রসন্তান প্রত্যাশী।

অথচ কবির কবরে কেউ কৃষ্ণচূড়া লাগাতো না।

কবির কবরে কোন এপিটাফ হতো না,

ট্রেনে কাটা পড়া বেওয়ারিশ কবিরা তো কবরে এপিটাফ পায় না।