স্বেচ্ছাচার অন্যের ক্ষতির কারণ’

স্বেচ্ছাচার অন্যের ক্ষতির কারণ’

প্রতীকি ছবি

যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন [তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০]

কাসেম শরীফ   

স্বেচ্ছাচার নিজের ও সমাজের জন্য সমূহ বিপদ ডেকে আনে। এর পথ ধরে স্বেচ্ছাচারী ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) বলেছেন, ‘স্বেচ্ছাচার বা কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই সর্বোত্তম জিহাদ। ’ (ইবনে মুফলিহ, আল-আদাবুশ শারইয়্যাহ : ৩/২৫১)

ইসলাম স্বেচ্ছাচারকে প্রশ্রয় দেয়নি।

বিজ্ঞাপন

রাজনীতি ও বিচারব্যবস্থার ক্ষেত্রে এ কথা আরো বেশি প্রযোজ্য। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ যোগ্য ব্যক্তির কাছে আমানত (অর্পিত দায়িত্ব) সমর্পিত করার নির্দেশ দিচ্ছেন। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচারকার্য পরিচালনা করবে, ন্যায়ানুগভাবে তা করবে। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৫৮)

কারো জমিনের সীমানা ঠেলে তার কিয়দংশ নিজের অধিকারভুক্ত করে নেওয়া কবিরা গুনাহ। এই অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। এটা স্বেচ্ছাচার। এমন স্বেচ্ছাচারী মানুষ আল্লাহর অভিশপ্ত। আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ লানত করেন ওই ব্যক্তিকে, যে অন্যের জমিনের সীমানা পরিবর্তন করে। ’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৮)

জমি আপনার মালিকানাধীন হলেও সেখানে এমন কিছু করতে পারবেন না, যাতে প্রতিবেশী কষ্ট পায়; বরং এমনভাবে জমির ব্যবহার করতে হবে, যাতে আপনার পাশের ব্যক্তি কষ্ট না পায়। ইসলামের মূলনীতি হলো, নিজের ক্ষতি করা যাবে না, অন্যের ক্ষতিও করা যাবে না। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও উবাদাহ বিন সামেত (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিজের ক্ষতি করা যাবে না এবং অন্যের ক্ষতিও করা যাবে না। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৩৪০)

আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে অন্যের ক্ষতি করবে আল্লাহ তার ক্ষতি করবেন এবং যে অন্যকে কষ্ট দেবে আল্লাহও তাকে কষ্ট দেবেন। ’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)

কখনো এমন হতে পারে, আপনি যে বস্তু দিয়ে অন্যকে কষ্ট দিয়েছেন, ওই বস্তু দিয়েই আল্লাহ আপনাকে কষ্টে ফেলবেন। আবু সিরমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কারো ক্ষতিসাধন করে, আল্লাহ তা দিয়েই তার ক্ষতিসাধন করেন। যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাকে কষ্টের মধ্যে ফেলেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪০)

যারা মানুষের ক্ষতিসাধন করে এবং যারা মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, এরা অভিশপ্ত। এরা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত। আবু বকর সিদ্দিক (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের ক্ষতিসাধন করে অথবা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে সে অভিশপ্ত। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৪১)

মহান আল্লাহ বোঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন।