পাবনায় হোটেল কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে নির্যাতন, হত্যার হুমকি!

পাবনায় হোটেল কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে নির্যাতন, হত্যার  হুমকি!

পাবনায় হোটেল কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে নির্যাতন, হত্যার হুমকি!

পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে লতিফ টাওয়ারের সুবিশাল ফ্লোর জুড়ে গড়ে ওঠা অভিজাত রেঁস্তোরা রাজমহলের কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে নির্যাতনের পাশাপাশি মালিকের পক্ষ থেকে হুমকি-ধামকির অভিযোগ উঠেছে।  চাকচিক্যময় সাজসজ্জা আর ব্যাপক প্রচারণায় গত বছর রেস্টুরেন্টটির কার্যক্রম শুরু হলেও, খাবারের মান ও পরিবেশ নিয়ে বার বার উঠেছে নানা প্রশ্ন। এবার প্রতিষ্ঠানটির মালিকের নাইম হোসেনের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন   বেতন না দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন কর্মীরা।

অভিযোগ উঠেছে, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মীকেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেতন দেননি হোটেল মালিক নাইম। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় বেতন ভাতার দাবিতে মালিককে চাপ দিলে, উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন অভিযোগ কয়েকজন শ্রমিকের।

রাজমহল রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ মানিক জানান, গত বছর রেস্টুরেন্ট চালুর সময় খুলনা থেকে আমাদের কয়েকজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। মালিক নাইম হোসেনের অনুরোধে মাসিক ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চুক্তিতে আমি কাজে যোগ দেই। কিন্তু, প্রথম মাসেই আমাকে কৌশলে ২২ হাজার টাকা বেতন নিতে বাধ্য করেন তিনি। এরপর কোন মাসেই ২০ হাজারের বেশি বেতন দেননি। প্রতিবাদ করলেই হুমকি ধামকি দেন মালিক নাইম। গত মাস থেকে সেই টাকাও দেননি। আমার বাড়িতে দুগ্ধ পোষ্য শিশু, স্ত্রী রয়েছে। আমি ছাড়া তাদের আর কোন অভিভাবক নেই। গত দু’দিন আমার বাচ্চার দুধও  কিনতে পারেনি স্ত্রী বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মানিক।

মানিক আরো বলেন, বাচ্চা ও স্ত্রীর ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে শনিবার রাতে অন্তত দুই হাজার টাকা চেয়ে গত রাতে আমি মালিক নাইমের সাথে দেখা করি। তিনি টাকা না দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালাগাল ও মেরে  ফেলার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে মারতে শুরু করলে আমি চলে আসি।

শিহাব নামের  এক শ্রমিক জানান, ফুড কোর্ট অপারেটর পদে এক মাস বিশ দিন কাজ করেছি। আমার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা রিসিপশনিস্ট পদে কাজ করতেন। বেতন ঠিকমতো না দেয়ায় কাজ ছেড়ে দিয়েছি। বকেয়া বেতন চাইলেই উনি দুর্ব্যবহার, ভয়ভীতি দেখান। দিনের পর দিন বেতন না পেয়ে অন্তত ৬ জন কাজ ছেড়ে চলে গেছে।

কাজ ছেড়ে খুলনায় চলে যাওয়া ওয়েটার মামুন বলেন, কোন মাসেই মালিক ঠিকমতো বেতন দেয় নি। মারধর করায় আমি কাজ ছেড়ে চলে এসেছি।

এদিকে, নির্যাতন ও হুমকির অভিযোগে শনিবার রাতে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী কর্মচারী মানিক।

তবে, বেতন দিতে টালবাহানা ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজমহল রেস্টুরেন্ট মালিক নাইম  হোসেন। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক লোকসানের মধ্যেও আমি কর্মচারীদের বেতন ভাতা সঠিকভাবে পরিশোধ করে আসছি। দু’একজন কর্মচারী আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করতে ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে অপপ্রচার করছে।

পাবনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন,‘রাজমহলের কর্মচারীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’