পাবনায় পৌরসভা কর্মচারী খুনের ঘটনায় সাবেক মেয়রসহ আটক ৪

পাবনায় পৌরসভা কর্মচারী খুনের ঘটনায় সাবেক মেয়রসহ আটক ৪

পাবনায় পৌরসভা কর্মচারী খুনের ঘটনায় সাবেক মেয়রসহ আটক ৪

পাবনার সুজানগর পৌরসভার কর্মচারী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলামিন হোসেন হত্যা ও তার ভাই রজব আলী আহতের ঘটনায় সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র এবং পৌর যুবলীগের সভাপতিসহ ৪ জনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। হত্যার প্রতিবাদে পৌরসভা তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।আটকের বিষয়টি মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন নিশ্চিত করেন।

এর আগে সোমবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় সুজানগর পৌরসভার রাধানগর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।  আটকের পর মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তাদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুজানগর বাজার এলাকার সাদেক আলীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন তোফা (৫০), তার ভাই সুজানগর পৌর যুবলীগের সভাপতি জুয়েল রানা (৪০), চর সুজানগর গ্রামের ওহের প্রামাণিকের ছেলে লিটন হোসেন (৪২) এবং কাচারীপাড়ার শ্রী গৌর কুমার (৪৫)।

ওসি জালাল উদ্দিন জানান, ‘হত্যাকান্ডে পর প্রথমে ডিবি পুলিশ তাদের আটক করে। পরে আজ মঙ্গলবার দুপুরে থানায় হস্তান্তর করা হয়। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তবে সেটি এখনো মামলায় লিপিবদ্ধ করা হয়নি।অভিযোগ তদন্ত করে দেখছি। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এবিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে সুজানগরের আতাইকুলা থানার সাদুল্লাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পূর্ববিরোধের জেরে যুবলীগ নেতা আলামিন হোসেন (৩০) কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই রজব আলী (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে আশঙ্কাজনকভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দুপুরে পাবনা আদালত থেকে সিএনজিযোগে বাড়ি ফিরছিলেন দুই ভাই আলামিন ও রজব। পথিমধ্যে সাদুল্লাপুর নামক স্থানে পৌঁছুলে জুয়েল রানা ও তোফাজ্জল হোসেন তোফা তার লোকজনকে সাথে নিয়ে তাদেরকে সিএনজি থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত দুইজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলামিনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অপরজন রজব আলীকে মুমূর্র্ষুু অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পৌরসভার কর্মচারী হত্যার প্রতিবাদে শোক জানিয়ে কালোব্যাচ ধারণ করে ৩ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে  পৌরসভা।

পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা বলেন,‘আমার কর্মচারী হত্যাকান্ডে জড়িত সকল খুনিকে আটক না করা হলে সুজানগর অচল করে দেয়া হবে। এসব খুনের প্রশ্রয়দাতা কথিত কামরুজ্জামান উজ্জলকে গ্রেপ্তার করলে খুনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে আমি মনে করি। 

দিবালোকে একজন নিরীহ মানুষকে কুপিয়ে হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যাবে না। যুবলীগের পদ ব্যবহার করে  জেলাজুড়ে নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিজের বাড়িতে মাদকের কারখানা খুলেছে। কথায় কথায় এলাকার মানুষকে হত্যার হুমকি দেয়, পিস্তল ঠেকিয়ে, অস্ত্রবাজি ও অবৈধ বালুর ব্যবসা করে সে অল্প বয়সেই সম্পদের পাহাড় গড়েছে। খুনিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনদিনের শোকসহ কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সকল আসামীদের আটক করা না হলে প্রয়োজনে পৌরসভার সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে।’