ভারতে অভিনব জুতার মিছিল

ভারতে অভিনব জুতার মিছিল

ছবি: সংগৃহীত

কলেজ চত্বরে প্রকাশ্য সমাবেশ নিষিদ্ধ। সন্ধ্যা ৬টার সময়েও সেখানে পুলিশি প্রহরা। কিন্তু প্রতিবাদ কি এভাবে রোখা যায়? তাই মানুষের মাথা দেখা না গেলেও দেখা গেল সারি সারি জুতার মিছিল। যারা মানুষের প্রতিনিধিত্ব করল।সঙ্গে ছিল ফাঁকা পোস্টার। একছিটে কালির আঁচড়ও নেই তাতে। শুক্রবার এই নীরব প্রতিবাদ দেখিয়ে দিল, একটি শব্দ খরচ না করেও কীভাবে এনআরসির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়।

এমন অভিনব প্রতিবাদ করে দেখালেন বেঙ্গালুরুর আইআইএমের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবারে এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। কিন্তু আরেকবার জামিয়া কাণ্ড যাতে না ঘটে তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

সন্ধ্যার পরেও যখন পুলিশ টহল দিচ্ছে ক্যাম্পাসে তখনই শুরু হয় এই অভিনব প্রতিবাদ। প্রথমে কলেজের এক শিক্ষক গোলাপি রঙের একটি পোস্টার রাখেন গেটের বাইরে। পোস্টারে একটি অক্ষরও লেখা নেই। সেই পোস্টারের ওপর তিনি খুলে রেখে যান জুতো।এরপরে একইভাবে বেরিয়ে আসেন দুই শিক্ষার্থী। তাদের একজন হুইল চেয়ারে বসা। অন্যজন নিজের এবং বন্ধুর দুটি পোস্টার এবং জুতা বাইরে রেখে চুপচাপ ভেতরে চলে যান।

ক্রমশ বাড়তে থাকে জুতর সংখ্যা। সমস্ত শিক্ষার্থী একে একে বাইরে এসে রেখে যান জুতো আর ফাঁকা পোস্টার। কেউ কেউ রাখেন ফুল। যুক্তি, এই ফুল শান্তির প্রতীক।

বিক্ষোভ সমাবেশ না করে, শ্লোগান না দিয়ে, প্ল্যাকার্ড হাতে না নিয়ে বিরোধিতার এই ঘটনা যেন প্রতিবাদের নতুন ভাষার জন্ম দিল।সারিবদ্ধ জুতা আর ফাঁকা পোস্টার ততক্ষণে দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছে, বেঙ্গালুরু আইআইএমের শিক্ষার্থীরা পাশে রয়েছেন জামিয়া প্রতিবাদের। তারা মেনে নেননি নয়া নাগরিকত্ব আইন।

প্রসঙ্গত, ১৪৪ ধারা মেনে চার জনের বেশি একসঙ্গে এক জায়গায় জমায়েত হতে পারবেন না বলেই বাকিরা অপেক্ষা করেছেন গেটে ভেতরে। হামলার ভয়ে সামনে আসতে চাননি কয়েকজন। তাদের জুতো বয়ে নিয়ে বাইরে রেখেছেন এক ছাত্রী।

তার কথায়, দেশে যা হচ্ছে তাতে তারা শঙ্কিত। প্রতিবাদে সামিল হয়েও তাই যারা নিজেদের অবস্থান, ভবিষ্যৎ নিয়ে কুণ্ঠিত তারা অন্যের মাধ্যমে নিজেদের জুতো বাইরে রাখছেন।

এনডিটিভিকে কলেজের এক অধ্যাপক দীপক বলেন, নয়া আইন কেড়ে নিয়েছে দেশবাসীর আত্মপরিচয়। স্বাধীন দেশে এই পদক্ষেপ সঠিক নয়। বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার অধিকার আছে আগামী প্রজন্মের। তাই শিক্ষার্থীদের বলতে দেওয়া হোক। সত্যিই এখন প্রতিবাদের প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, সময় এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি প্রহরা বাড়লেও প্রশাসন কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করেনি এই নীরব প্রতিবাদের। -সূত্র:এনডিটিভি।