সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ড : মৃত্যু বেড়ে ৪৯

সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ড : মৃত্যু বেড়ে ৪৯

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রামের জেলা সিভিল সার্জন মোঃ ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, আগুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি। তাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আগুন নেভাতে গিয়ে তাদের নয়জন সদস্য নিহত হন। আরো তিনজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সেখানে বার্ন ইউনিটে গুরুতর অবস্থায় পাঁচজনকে নিয়ে আসা হয়েছে।

ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মাইন উদ্দিন পাঁচজন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলেন।

মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। সবমিলিয়ে আহতের সংখ্যা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও পুলিশসহ ২০০ জনের মতো। যাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও শহরের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানান মোঃ মাইন উদ্দিন।

ঘটনাস্থলে একটু পরপর বিস্ফারণ হচ্ছে বলে আগুন নেভাতে সমস্যা বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি।

আগুন নেভাতে আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যোগ দেন। সহায়তা করছে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, শনিবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় বিএম ডিপো নামের একটি কন্টেইনার টার্মিনালে শুরুতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ৪০ মিনিটের মাথায় ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটে। মালবাহী কন্টেইনারগুলো দুমড়ে মুচড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। পরপর বেশ কটি বিস্ফোরণ হয়।

বিস্ফোরণের সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ করছিল।

ডিপোতে আমদানি হয়ে আসা এবং রফতানিমুখী প্রচুর মালবাহী কন্টেইনার ছিল। যার মধ্যে রাসায়নিক পদার্থও ছিল।

চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর আগে রফতানি পণ্য এবং আমদানি হয়ে আসা মাল খালাস হওয়ার পর 'ট্রানজিট পয়েন্ট' হিসেবে কন্টেইনার রাখার জন্য ডিপোটি ব্যবহৃত হয়।

বিস্ফোরণের সময় পাঁচ কিলোমিটারের মতো দূরত্বে কাঁপুনি অনুভূত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে। এ সময় আশপাশে ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বাতাসে ঝাঁঝালো গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে বলে স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান। স্থানীয় মানুষজনকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেখানে আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট।

ডিপোটিতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামের একটি রাসায়নিকে আগুন লেগেছে বলে নিশ্চিত হয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

যে রাসায়নিক এখন আশপাশের ড্রেনে ছড়িয়ে পড়ছে। রাসায়নিক যেন আশপাশে জলাধার ও সমুদ্রে আরো ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে কাজ চলছে। বালুর বস্তা দিয়ে ড্রেন আটকে দেয়া হয়।

সূত্র : বিবিসি