যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যা করে

যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যা করে

ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার মার্কিন হানায় নিহত হয়েছেন ইরানের ‘কুদস ফোর্স’-এর কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলাইমানি। নিরাপত্তার প্রায় অভেদ্য ঘেরাটোপে থাকা সত্ত্বেও কিভাবে ও কোন অস্ত্রে তাকে হত্যা করল আমেরিকা? উঠছে এই প্রশ্ন। এর উত্তরে উঠে এসেছে এক ঘাতক মার্কিন অস্ত্রের নাম। জানা গেছে, সোলেমানিকে নিকেশ করেছে অত্যাধুনিক মার্কিন ড্রোন এমকিউ-৯ রিপার।

একবার জ্বালানি ভরে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হামলা চলতে সক্ষম এই চালকবিহীন আকাশযানটি। ‘এমকিউ-৯ রিপার’ ড্রোনটির সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে ৪৮২ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টা। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ক্যামেরা, যা রাতেও যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি পরিষ্কার পাঠিয়ে দেয় সুদূর ঘাঁটিতে বসে থাক চালকের মনিটরে। মার্কিন বিমানবাহিনীর এই ড্রোনটির প্রধান অস্ত্র ‘জিবিইউ-১২ প্যাভওয়ে ২’ লেসার গাইডেড বম্ব ও ‘এজিএম-১১৪ হেলফায়ার ২’ ও ‘এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার’ মিসাইল। পেন্টাগনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সোলেমানির কনভয়ে ‘হেলফায়ার ২’ মিসাইল দিয়ে হামলা চালিয়েছিল মার্কিন ড্রোন।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা অপারেশনের শেষ পর্যায় ছিল ড্রোন হামলা। এর আগে সোলাইমানির গতিবিধির উপর কড়া নজর ছিল মার্কিন ও ইসরাইলি গোয়েন্দাদের। এমনকী ইরানি কমান্ডারের ফোনালাপও টেপ করছিলেন তারা। প্রয়োজনে নজরদারি ড্রোন উড়িয়ে সোলাইমানির পিছু ধাওয়া করা হতো। উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে সোলেমানিকে হত্যার চেষ্টা করে বিফল হয় ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।

উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনার মাত্র তিনটি অপারেশনাল ড্রোন ঘাঁটি রয়েছে। সেগুলো হলো- আলি আল-সালেম (কুয়েত), উদেইদ এয়ারবেস (কাতার), আল দাফর (সংযুক্ত আরব অমিরাত)। বাগদাদ বিমানবন্দরে নিকটতম মার্কিন ড্রোন ঘাঁটি কুয়েতে। তবে সেখান থেকে বাগদাদের দূরত্ব প্রায় ৫৭০ কিলোমিটার। ফলে আগে থেকেই খবর না থাকলে হামলা চালানো সম্ভব নয়।

এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে মনে করা হচ্ছে, সোলাইমানির সঙ্গেই ছায়ার মতো ছিলেন কোনো মার্কিন গোয়েন্দা। সিরিয়া বা লেবানন থেকে ইরানি কমান্ডারকে নিয়ে বিমান ছাড়ার পরই তিনি সেই খবর পৌঁছে দেন মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে। ফলে আগে থেকেই বাগদাদ বিমানবন্দরে ওঁত পেতে ছিল মার্কিন ড্রোন ‘এমকিউ-৯ রিপার’।

সব মিলিয়ে গোটা অপারেশনটি অত্যন্ত জটিল অঙ্কের মতো ধাপে ধাপে সমাধান করে মার্কিন সেনাবাহিনী। গোয়েন্দা খবর ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মদতে হত্যা করা হয়েছে ইরানের এলিট গার্ড ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাশেম সোলাইমানিসহ ৮ জনকে।
সূত্র : সংবাদ সংস্থা