সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১ আসামী গ্রেফতার

সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১ আসামী গ্রেফতার

ছবি- নিউজজোন বিডি

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইমরান শেখ ইমন(৩২) নামের আরো এক আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের রাজারহাট মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার ইমন ওই এলাকার সামসুল আলমের ছেলে।

শুক্রবার বিকেল ৪ টার সময় নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মোঃ খাইরুল আলম প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। পুলিশ সুপার তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাংবাদিক রুবেল এর নিখোজ হওয়ার পর থেকেই জেলা পুলিশ গুরুত্বের সাথে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে থাকে। এর পর ৭ জুলাই কুমারখালীর গড়াই নদী থেকে রুবেলের লাশ উদ্ধারের পর এই হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচনের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই সাথে গোয়েন্দা দল, সাইবার ক্রাইম ইউনিট, এবং র্যাবের একটি বিশেষ টিম মাঠে নামে। এরই প্রেক্ষিতে প্রযুক্তির সহয়তায় একেবারে নিশ্চিৎ হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১২ টার দিকে ইমন কে গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সুপারের দাবি, ইমনকে গ্রেফতারের পর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এই হত্যাকান্ডের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপুর্ন তথ্য পাওয়া গেছে। যেগুলো এখন যাচাই বাচাই করা হচ্ছে। তদন্তের সার্থে  এর চাইতে বেশি কোন তথ্য দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, সাংবাদিকতার বিষয় নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়নি। এর সাথে অন্য একটি বিষয় জড়িত। যেহেতু এই মামলায় আরো অনেকে জড়িত আছে তাই এখনি পুরো বিষয়টি পরিস্কার করা যাচ্ছে না। এতে আসামীরা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে। পুলিশ সুপার আরো জানান, ইমনকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।পরে গ্রেফতার ইমরান শেখ ইমনকে কড়া পুলিশ পাহারায় কুষ্টিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নেয়া হয়।

এর আগে গত ২০ জুলাই এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কাজি সোহান এবং  খন্দকার আশিকুর রহমান জুয়েল নামের দুই আসামীকে গ্রেফতার করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন র‌্যাব-১২।

গত, ৩ জুলাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের সিঙ্গার মোড়ে নিজ পত্রিকা অফিসে ছিলেন হাসিবুর। তখন মুঠোফোনে একটি কল পেয়ে অফিস থেকে বের হয়ে যান। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে তাঁর ছোট ভাই মাহাবুব। এর চার দিন পর  বৃহস্পতিবার(৭ জুলাই) দুপুরে কুমারখালী পৌরসভার তেবাড়িয়া এলাকায় নির্মাণাধীন গোলাম কিবরিয়া সেতুর নিচে গড়াই নদী থেকে হাসিবুরের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে হাসিবুর রহমানের চাচা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এ ব্লকের হাবিবুর রহমানের ছেলে। রুবেল জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি বিএডিসিতে ঠিকাদারি ব্যবসাও করতেন।