দল ও জোট পুনর্গঠন শেষ করছে বিএনপি

দল ও জোট পুনর্গঠন শেষ করছে বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ বিরতির পর ফের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপ শুরু করেছে বিএনপি। একইসাথে সংগঠন পুনর্গঠনের কাজও সারছে দলটি। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল ও ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাথে সংলাপ করে বিএনপি।

এভাবে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপের মাধ্যমে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করছে দলটি। জানা যায়, জুনের মাঝামাঝি সময়ে দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কারণে সাংগঠনিক কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত রেখে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোকেই অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির হাইকমান্ড। ফলে এই সময়ে দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন দলের নেতারা। সে কারণে সংলাপ শুরু করেও মাঝপথে বিরতি দিতে হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় আবারো সংলাপ শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন নির্বাচন নয়’ এই এক দফা সামনে রেখেই অন্যান্য দলের সাথে বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে দিয়ে একটা ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’ গড়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিএনপির হাইকমান্ড। এদিকে টেলিভিশনে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী কথা বলেন বা টকশোতে অংশ নেন তাদের কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি।

জানা গেছে, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাস্তবতার নিরিখেই পথ চলতে চান দলের নীতিনির্ধারকরা। এজন্য দল পুনর্গঠনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। সেইসাথে কূটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছে দলটি। পাশাপাশি দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতাদেরকে পরামর্শ দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের একাধিক নেতা জানান, সংলাপের মাধ্যমে সরকারবিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর সাথে ঐক্য স্থাপনের পর যুগপৎ আন্দোলনে যাবে বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলনের একটি পর্যায়ে গিয়ে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক মঞ্চ গড়া হবে। যার মূল লক্ষ্য থাকবে- সরকারের ওপর চাপ তৈরি করা, যাতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি মানতে বাধ্য করা। দলের সংশ্লিষ্ট নেতারা বলছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নানমুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বিএনপি। এই মুহূর্তে দুটি কাজ সমানতালে চলছে বিএনপিতে। একটি হলো- বৃহত্তর রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠন অপরটি- দল পুনর্গঠন।

বন্যার কারণে সাংগঠনিক কাজ স্থগিতের পর ফের শুরু হলো রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ। ঈদ, বন্যা ও পদ্মা সেতুর বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ নানা কারণে গত প্রায় এক মাস রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে বিএনপির সংলাপ বন্ধ ছিল। তবে সংলাপের এই বিরতিতে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং জাতিসঙ্ঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সাথে পৃথক বৈঠক করেছে বিএনপি। আর গত সোমবার বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার মাধ্যমে শুরু হয় সাংগঠনিক কার্যক্রম। সংগঠনকে গতিশীল করতে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানো হবে। আংশিক কমিটিগুলো শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

এ দিকে বন্যা পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাদেরকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে যারা বিগত নির্বাচনে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী এবং মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তাদেরকে বানভাসিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের জন্য জাতীয় ত্রাণ কমিটিও গঠন করেছে বিএনপি। বিভিন্ন সাংগঠনিক ইউনিটের নেতারা সম্মিলিতভাবে এবং কেউ এককভাবে দলের ত্রাণফান্ডে অর্থ প্রদান করেছেন।