চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি

চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি

চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি

চুক্তি নবায়ন ও শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে মৌলভীবাজারের চা অঞ্চল লংলাভ্যালীর ৩৪ বাগানের ৩০টিতেই শ্রমিকরা কর্ম বিরতি পালন করেছে। এর অংশ হিসেবে রাজনগর উপজেলার করিমপুর ও রাজনগর চা বাগানে দু’ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত লংলাভ্যালীর ৩০টি বাগানে তিন দিনের কর্মসূচির প্রথম দিনের দু’ঘণ্টা কর্ম বিরতি পালন করা হয়। এতে কয়েক শ’ চা শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।

চা বাগানের শ্রমিকরা জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরী দিয়ে জীবন চালানো দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। ১৯ মাস আগে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও মালিক পক্ষ নতুন চুক্তি নবায়নে গরিমসি করছেন। চুক্তি নবায়ন ও মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে দু’ঘণ্টা করে আমরা তিন দিনের কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।

বাগান কর্তৃপক্ষ জানান, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চায়ের মূল্য কমে যাওয়ায় বাগান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিং এসব বিড়ম্ভনা নিয়ে চা উৎপাদনে আগের চেয়ে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রাজনগর উপজেলার করিমপুর চা বাগানের মাণ্ডপঘরে শ্রমিকরা কর্মসূচি পালনে এক সমাবেশ করে। বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি গণেশ বড় কুর্মির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন লংলাভ্যালীর সভাপতি শহীদুল ইসলাম, ডলি নাউডু, বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ঘোষ, ইউপি সদস্য কাজল রায়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজনগর চা বাগানের শ্রমিকরা একই দাবি নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।

শ্রমিক নেতারা জানান, মৌলভীবাজারের চা অঞ্চল লংলাভ্যালীর ৩৪ বাগানের মধ্যে ৩০টি বাগানে কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে।

রাজনগর চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি মন্টু নুননিয়া বলেন, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অল্প মজুরিতে জীবন চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি। নুন আনতে পান্তা পুরায় অবস্থা।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, মালিক পক্ষ মজুরী বাড়াতে গরিমসি করছে। এতে চুক্তি নবায়নের ১৯ মাস চলে গেছে। তারা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষনা করেছি।

লংলাভ্যালীর সভাপতি চা শ্রমিকনেতা শহীদুল ইসলাম বলেন, চা-শ্রমিকরা চা শিল্পের নিপুন কারিগর। তারা মানবেতর জীবন যাপন করে চা শিল্পকে সজিবতা দিয়ে আসছে। বর্তমান বাজার মূল্যে স্বল্প মজুরীতে জীবন চালানো দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।

মাথিউরা চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো: সিরাজুদৌলা বলেন, চা উৎপাদনে মালিক পক্ষ হিমশিম খাচ্ছেন। জ্বালানি তেল বিদ্যুৎ বিভ্রাটে উৎপাদন খরচ নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিশ্ব বাজারে চায়ের দামও কমে আসছে। এতে বাগান পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।