নামাজে কাতার সোজা রাখার ফজিলত

নামাজে কাতার সোজা রাখার ফজিলত

সংগৃহীত

আল্লাহ তায়ালা প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। সময়মতো জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জামাতে নামাজ পড়ার জন্য কাতার সোজা করার গুরুত্ব অপরিসীম। কাতার সোজা করা সুন্নাত, ওয়াজিব, মোস্তাহাব এ নিয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে কাতার সোজা না করা মাকরূহে তাহরিমি। 

কাতার সোজা করে নামাজ আদায়কারীদের জন্য ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন। এ বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতার সোজা করে। আর যে ব্যক্তি কাতারে ফাঁক বন্ধ করে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।’ (ইবনে মাজাহ : ৯৯৫; মুসনাদে আহমাদ : ২৪৬৩১)। 

হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে আরও বর্ণিত হয়েছে- রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কাতার সোজা করো। কাঁধগুলোকে বরাবর রাখ। ফাঁক বন্ধ করো। তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ে দিও না। যে কাতার সংযুক্ত করে আল্লাহ তায়ালাও তাকে সংযুক্ত করে দেন। আর যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তায়ালা তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।’ -(আবু দাউদ : ৬৬৬)

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা নামাজের ইকামত দেওয়া হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের অভিমুখী হয়ে বললেন, তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করো এবং গায়ে গায়ে মিশে দাঁড়াও। কেননা আমি তোমাদেরকে আমার পেছন দিক থেকেও দেখতে পাই।’ -(বুখারি : ৭১৯)। 

অন্য এক হাদিসে এসেছে, হজরত নোমান ইবনে বশির (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের কাতারগুলোকে এমনভাবে সোজা করতেন, যেন তিনি তীর সোজা করবেন। এভাবে তিনি করতে থাকলেন যতদিন না তিনি দেখলেন যে, আমরা তার থেকে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছি। অতঃপর একদিন তিনি নামাজের জন্য বের হলেন।

যখন তিনি তাকবির দিতে যাবেন সেই মুহূর্তে এক ব্যক্তিকে দেখলেন সে তার বুক কাতারের বাইরে বের করে রেখেছে। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর বান্দারা, হয় তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করবে। নতুবা তোমাদের মধ্যে আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই বিরোধিতা সৃষ্টি করে দেবেন।’ -(বুখারি : ৭১৭; মুসলিম : ১০০৭) 

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নামাজে তোমাদের কাতারগুলো মিলেমিশে দাঁড়াবে এবং কাতারগুলোও কাছাকাছি (প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় রেখে) বাঁধবে। নিজেদের কাঁধ মিলিয়ে রাখবে। কসম ওই জাতের যার হাতে আমার জীবন! আমি শায়তানকে তোমাদের (নামাজের) কাতারের ফাঁকে ঢুকতে দেখি যেন তা হিজাযী ছোট কালো বকরী। -(আবু দাউদ, ৬৬৫) 

জাবির ইবনু সামুরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বের হয়ে এসে আমাদেরকে গোল হয়ে ভিন্ন ভিন্নভাবে বসা দেখে বললেন, কি ব্যাপার; তোমাদেরকে বিভক্ত হয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। 

এরপর আর একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে আগমন করলেন এবং বললেন, তোমরা কেন এভাবে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়াচ্ছ না যেভাবে ফেরেশতারা আল্লাহর সামনে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! ফেরেশতারা আল্লাহর সামনে কিভাবে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়? তিনি বললেন, তারা প্রথমে সামনের কাতার পুরা করে এবং কাতারে মিলেমিশে দাঁড়ায়। -(মুসলিম, ৪৩০)