শুভ জন্মদিন মাশরাফি

শুভ জন্মদিন মাশরাফি

শুভ জন্মদিন মাশরাফি

কে জানতো বাংলার ক্রিকেট প্রেমীরা ১৯৮৩ সালের ৫ অক্টোবরকে স্বরণ করবেন। কেননা এই অক্টোবরের এক মাহেন্দ্রক্ষণে নড়াইলের সেই চিত্রা নদীর পাড়েই তো জন্মেছিলেন কৌশিক নামে সমধিক পরিচিত দুরন্ত চঞ্চল এক বালক। সময়ের বিবর্তন আর কালের পরিক্রমায় যার পরিচয় আমাদের কাছে প্রিয় ‘ম্যাস’ নামে।

মাশরাফি মানেই সবুজ স্বাধীন ব-দ্বীপের পোড়া ভূখণ্ডে মুগ্ধতা জাগানিয়া জেদি আর আত্মগর্বী একটি নাম; যার সম্মুখে কৃতজ্ঞতায় নতজানু হতে হয় বার বার। মাশরাফি মানেই তো "খোঁড়া" পায়ের কীর্তিগাঁথায় হাজারো মানুষের জীবন যুদ্ধের অনুপ্রেরণা। মাশরাফি মানেই ভাগ্য বিভ্রম গল্প, সম্মুখে এগিয়ে যাবার তীব্র বাসনা। মাশরাফি মানে কোটি ভক্তের অনুপেরণা। মাশরাফি মানে কলার উচো করে বীরের বেশে দাড়ানো। মাশরাফি মানে হার না মানা মানসিকতা, দেশ আর মানুষের প্রতি প্রেম-প্রীতি ভালোবাসা, বাইশ গজের অকুতোভয় দুঃসাহসী নেতৃত্ব কিংবা অর্জনের গর্জন! যার সবই আজ ভেসে বেড়ায় বিশ্বজুড়ে; নানা জনের স্বরে-সুরে, মুখে-মুখে। বিসিবি যখন বিপদে পড়েছে স্বরণ করেছে বাংলার ক্রিকেটের বরপুত্র মাশরাফিকে। তিনি তো ছিলেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো বাংলা বাঘ, ক্রিকেটের সোনালি দিনের বংশীবাদক। গ্রিক ট্র্যাজেডি আর ভারতীয় সভ্যতার মিশেলে তিনি যেন এক মহাকাব্য। এমন মহাকাব্যকে ধরতে পারতেন হয়তো কেবল মহাকবি হোমার কিংবা মহাঋষি বেদব্যাস।

শেষ বেলায় ভুলে যেও অভিমান। মনে রেখ কেবল একজনই ছিল, ভালোবাসতো শুধু তোমাদের....’ গত ৬ মার্চ এমনি দু'খানা লাইনে পরিসমাপ্তি হয় বাইশ গজে নেতা মাশরাফির অধ্যায়ের। কিন্তু বিদায়ের পূর্বে স্বীয় কীর্তিতে, অর্জনে স্থান নিয়েছেন গৌরবময় ইতিহাসে। যা কখনো পরিসংখ্যানে মাপা যাবে না। কাগজ-কলম আর বই দ্বারা বুঝা যাবে না। রেডিও, টেলিভিশন আর ছাপা অক্ষরে যার মূল্যায়ন হবে না।

নেতা, মানুষ আর খেলোয়াড়-এ তিনটি শব্দের শ্রেষ্ঠ সমন্বয়েই একজন মাশরাফি; যার এমন সংমিশ্রণ আগে কখনো-কোনো দিন এই ভুবন দেখেনি।’ -মন্তব্যটা হারানো দিনের বৃটিশ সেনানী নাসের হুসেইনের। একাকী নিভৃত মনে ভাবলে, চোখটি মেলে তাকালে কিংবা খানিকটা ধারণা রাখলে, আপনিও স্বয়ং সমর্থন দিবেন তাকে। বলবেন, ভুল বলেননি ব্রিটিশ সেনানী; মাশরাফি তো এমনি! এজন্য তাকেই বলা যেতে পারে শুভ জন্মদিন ক্যাপটেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।