গুনাহকে তুচ্ছ মনে করতে নেই

গুনাহকে তুচ্ছ মনে করতে নেই

গুনাহকে তুচ্ছ মনে করতে নেই

গুনাহ আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে। বান্দার গুনাহের মাত্রা যত বৃদ্ধি পায়, সেই দূরত্ব ততই বৃদ্ধি পেতে থাকে। এমনকি এক সময় বান্দা ছিটকে পড়ে স্বীয় প্রভুর রহমতের ছায়া থেকে। তাই গুনাহ ছোট হোক বা বড় হোক- গুনাহকে কখনো ছোট করে দেখতে নেই।

ফোঁটা ফোঁটা পানি জমে যেমন সৃষ্টি হয় নদী-সাগর, তেমনি ছোট ছোট পাপরাশি একত্র হয়ে একসময় জাহান্নামের ঠিকানা গড়ে উঠবে। হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, ‘তোমরা এমনসব কাজ করো যেগুলো তোমাদের দৃষ্টিতে চুলের চেয়েও অধিক হালকা-পাতলা; কিন্তু আমরা রাসূলুল্লাহ সা:-এর যুগে সেগুলোকে ধ্বংসাত্মক মনে করতাম’ (সহিহ বুখারি-৬৪৯২)।

মানুষ যেন নিজের পাপের প্রতি উদাসীন না হয়ে যায় সে জন্য রাসূলুল্লাহ সা: সতর্ক করে বলেন, ‘একজন ঈমানদার ব্যক্তির কাছে তার পাপ হলো একটি পাহাড়ের মতো, যার নিচে সে বসে আছে ও সে আশঙ্কা করে যে, সেটি তার ওপর পতিত হতে পারে। অন্য দিকে, একজন দুষ্ট মানুষ তার পাপকে উড়ন্ত মাছির মতো মনে করে ও সেটিকে অবজ্ঞা করে’ (সহিহ বুখারি-৬৩০৮)।

গুনাহের ব্যাপারে সতর্ক করে তিনি আরো ইরশাদ করেন, ‘তোমরা ছোট ছোট গুনাহ থেকে সাবধান হও! ছোট ছোট গুনাহগুলোর উদাহরণ ওই লোকদের মতো, যারা কোনো খোলা মাঠে বা প্রান্তরে গিয়ে অবস্থান করল এবং তাদের প্রত্যেকেই কিছু কিছু করে লাকড়ি সংগ্রহ করে নিয়ে এলো। শেষ পর্যন্ত তারা এ পরিমাণ লাকড়ি সংগ্রহ করল যা দিয়ে তাদের খাবার পাকানো সম্পন্ন হলো। নিশ্চয়ই (তাওবা ব্যতীত) ছোট ছোট গুনাহ যখন জমে যাবে, তখন তাদেরকে ধ্বংস করে ফেলবে।’ অন্য এক বর্ণনায় এসেছে- ‘তোমরা ছোট ছোট গুনাহ থেকে সাবধান হও; কেননা সেগুলো মানুষের কাঁধে জমা হতে থাকে, অতঃপর তাকে ধ্বংস করে দেয়’ (সহিহুল জামে-২৬৮৬)।

গুনাহ করা মানুষের স্বভাব। তার দ্বারা গুনাহ হতেই পারে। তাই বলে এ গুনাহ নিয়ে বসে থাকা যাবে না; বরং গুনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথেই তাওবা করে নিতে হবে। না হয় এ গুনাহ একদিন তাকে জাহান্নামে নিয়ে ছাড়বে।আল্লাহ আমাদের বোঝার ও সে মোতাবেক আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া হামিদিয়া বটগ্রাম, সুয়াগাজী, সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা