বারিতে দেশের প্রথম জৈব বালাইনাশক গবেষণাগারের উদ্বোধন

বারিতে দেশের প্রথম জৈব বালাইনাশক গবেষণাগারের উদ্বোধন

বারিতে দেশের প্রথম জৈব বালাইনাশক গবেষণাগারের উদ্বোধন

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর কীটতত্ত্ব বিভাগে দেশের প্রথম জৈব বালাইনাশক গবেষণাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে।বুধবার বারি’র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ গবেষণাগারের উদ্বোধন করেন।

‘বাংলাদেশে শাক-সবজি, ফল ও পান ফসলের পোকামাকড় এবং রোগবালাই ব্যবস্থাপনায় জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে। এ গবেষণাগারে ফসলে রাসায়নিক কীটনাশকের অপব্যবহার রোধ এবং নতুন নতুন জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

গবেষণাগার উদ্বোধন শেষে ‘বাংলাদেশে শাক-সবজি, ফল ও পান ফসলের পোকামাকড় এবং রোগবালাই ব্যবস্থাপনায় জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা কীটতত্ত্ব বিভাগের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

বারি’র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ কর্মশালার উদ্বোধন করেন। পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ) ড. ফেরদৌসী ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইংয়ের পরিচালক কৃষিবিদ মো: এমদাদ হোসেন সেখ, বারি’র পরিচালক (সেবা ও সরবরাহ) ড. মো: কামরুল হাসান, পরিচালক (গবেষণা) ড. মো: তারিকুল ইসলাম এবং বারি’র সাবেক পরিচালক (পরিকল্পনা ও মূল্যায়ন উইং) ড. সৈয়দ নূরুল আলম।

বারি’র কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: আখতারুজ্জামান সরকারের সঞ্চালনায় কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য এবং প্রকল্পের বারি অঙ্গের সার্বিক কার্যক্রম উপস্থাপন করেন বারি’র কীটতত্ত্ব বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. নির্মল কুমার দত্ত।

প্রকল্পের কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতর (ডিএই) অংশের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন ডিএই এর অতিরিক্ত উপপরিচালক ও উপ-প্রকল্প পরিচালক কারিমা আক্তার। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় বারি’র বিভিন্ন বিভাগ ও কেন্দ্রের বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণ কর্মী, বিভিন্ন জৈব বালাইনাশক প্রস্তুতকারী কোম্পানির প্রতিনিধি এবং কৃষক প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, ২০১৮ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত চলমান এ প্রকল্পটির কার্যক্রম দেশের ১৪টি জেলার ২১টি উপজেলায় পরিচালিত হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৩০টি জৈব বালাইনাশক ভিত্তিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। একইসাথে ফসলের জন্য ক্ষতিকর ৭টি পোকা আবিষ্কার, ২৬টি নতুন জৈব বালাইনাশক নিবন্ধন এবং ১টি জৈব বালাইনাশক গবেষণাগার স্থাপন করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বারি’র মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, আমাদের দেশে পোকামাকড়ের আক্রমণসহ বিভিন্ন কারণে মোট ফসলের ১০-১৮ শতাংশ উৎপাদন পর্যায়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একইসাথে কৃষকের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে ফসলে যত্রতত্র এবং মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করছে। যা আমাদের দেশের মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ফসলে রাসায়নিক কীটনাশকের অপব্যবহার রোধ এবং জৈব বালাইনাশের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। আমি আশা করি, আজকে যে গবেষণাগার উদ্বোধন হলো তার মাধ্যমে জৈব বালাইবাশক ভিত্তিক আরো নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হবে যা দেশে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।