২০২২ সাল ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর বছর: বিজিএমইএ

২০২২ সাল ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর বছর: বিজিএমইএ

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) শনিবার বলেছেন, সদ্য শেষ হওয়া ২০২২ ছিল অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ও পুনর্গঠনের একটি বছর।

বিজিএমইএ পরিচালক মো মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় দুর্যোগ, কোভিড-১৯-এর দ্বারা সৃষ্ট সমস্ত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, আমরা আমাদের স্থিতিস্থাপকতা প্রমাণ করেছি এবং ঘুরে দাঁড়িয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি। উন্নত অর্থনীতিগুলোও মন্দার দিকে যাচ্ছে, আর আমরা আমাদের অর্থনীতি এখনও মহামারি সঙ্কট থেকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে পারিনি। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কারণে জ্বালানি ও খাদ্যসহ পণ্যের দাম বাড়ছে এবং বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতির হার ২০২২ সালে রেকর্ড ৮ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছিল; যা ২০২১ সালে ছিল ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।’

তাই আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের চাহিদা ও ক্রয়ক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে। এসবই খুচরা বিক্রয় বাজারকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইনকে ব্যাহত করছে।

রুবেল বলেন, ‘তবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে, আমাদের পোশাক রপ্তানি ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার ছিল। এটি তৈরি পোশাক (আরএমজি) উৎপাদনের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা, কেননা আমরা ৪০ বছরের যাত্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বাজারগুলো ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও মার্কিন অপ্রচলিত বাজারে আমাদের রপ্তানি অংশ দ্বিগুণ হয়েছে। ০৯ অর্থবছরে রপ্তানি ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ থেকে ২২ অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। প্রধান অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’

২০২১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউ’ অনুসারে, বিশ্ব বাজারে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক হিসেবে স্থান পেয়েছে।

রুবেল বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য শীর্ষ ডেনিম-সোর্সিং দেশ হয়ে উঠেছে। এখন আমরা সবচেয়ে বড় পোশাক রপ্তানিকারক চীনের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতায় রয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০২২ আমাদের জন্য একটি স্বতন্ত্র বছর হয়ে থাকবে, কারণ আমরা ৫০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি ছাড়িয়েছি।’

বিজিএমইএর পরিচালক বলেন, ‘২০২২ সালে আমরা ইএসজি অগ্রাধিকার ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০৩০ এর সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্নির্মাণ করেছি। আমাদের কাছে ইউএসজিবিসি দ্বারা স্বীকৃত লিড (এলইইডি) সবুজ আরএমজি কারখানার সংখ্যা সর্বাধিক। বর্তমানে, লিড গ্রিন কারখানার সংখ্যা ১৮৩, যার মধ্যে ৬০টি প্লাটিনাম।’

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের সবচেয়ে বড় সাফল্যের মধ্যে একটি ছিল ‘মেড ইন বাংলাদেশ সপ্তাহ’।

রুবেল বলেন, ‘শুধুমাত্র ২০২৩ সালে এগিয়ে যাওয়া নয়, পরবর্তী দশকেও আমাদের এই সমস্ত রূপান্তর বজায় রাখতে হবে এবং চালিয়ে যেতে হবে। পণ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন, ফাইবার ও বাজার বৈচিত্র্য এবং মূল্য সংযোজন এই সেক্টরের জন্য প্রধান সুযোগ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়াও আমাদের ব্যাকওয়ার্ড এবং ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ শিল্পে আমাদের সক্ষমতা বিকাশ করতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের উদ্ভাবন, প্রযুক্তিগত আপগ্রেডেশন, ডিজাইন ও দক্ষতা উন্নয়ন এবং সামগ্রিক ব্যবসায়িক সক্ষমতার দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।’

সূত্র: ইউএনবি