ইবির ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ : শ্রেণিকক্ষের দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে মানববন্ধন

ইবির ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ : শ্রেণিকক্ষের দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে মানববন্ধন

ইবির ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ : শ্রেণিকক্ষের দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে মানববন্ধন

শেণিকক্ষের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ও বিভাগীয় অফিসে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে দাবি নিয়ে মানববন্ধন করে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। শনিবার (২১ জানুয়ারি) ক্যাম্পাসে তারা এসব কর্মসূচি পালন করেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে বিশ^বিদ্যালয়ে ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টসহ আটটি নতুন বিভাগ খোলা হয়। ছয় বছরেও শেণিকক্ষ সংকট না কাটায় বিভিন্ন ভবনে অন্য বিভাগ থেকে ধার করা কক্ষে শ্রেণি কার্যক্রম চলছে বিভাগটির। মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলার সম্প্রসারণ শেষে বিভাগটিকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ দিনে কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তারা গত বুধবার থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে নির্মাণাধীন চতুর্থ তলায় অবস্থান শুরু করেন। একইসঙ্গে দ্বিতীয় তলায় থাকা বিভাগীয় অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন।

শনিবার বিভাগটির শিক্ষার্থীরা সংকট কাটাতে চতুর্থ তলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক কক্ষ বরাদ্দের দাবিতে মানববন্ধন করেন। সকাল দশটায় প্রশাসন ভবনের সামনে দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে মানববন্ধনে অংশ নেন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। মানববন্ধন শেষে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা ছয় বছর ধরে বিভিন্ন ভবনে ঘুরে ঘুরে ক্লাস করছি, প্রশাসন আমাদের জন্য এখনো নিজস্ব শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ দিতে পারেনি। একইসঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ কাজ শুরু হওয়া অন্য ভবনগুলোর কাজ অনেক আগেই শেষ হলেও মীর মশাররফ হোসেন ভবনের কাজ এখনো শেষ হচ্ছে না। প্রতিবছর নতুন ব্যাচ যুক্ত হওয়ায় আমাদের স্বাভাবিক শ্রেণি-কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।’

তারা আরো বলেন, আমরা জানতে পেরেছি চতুর্থ তলায় আমাদের জন্য প্রস্তাবিত দুইটি ব্লকের মধ্য থেকে একটি অংশ নিয়ে ডিন অফিস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ জন্য ভবনের নকশাও পরিবর্তন করা হয়েছে। এতে চতুর্থ তলায় আমাদের বিভাগের স্থান সংকুলান সম্ভব হবে না। ফলে আমাদের শ্রেণিকক্ষ এক চতুর্থ তলায় থাকলেও শিক্ষকদের অফিস হবে দ্বিতীয় তলায়। এটা আমরা মানতে পারছি না। আমাদের দাবি, অতিদ্রুত চতুর্থ তলার কাজ শেষ করে দুইটি ব্লকের পুরোটাই আমাদের বরাদ্দ দিতে হবে। একইসঙ্গে চতুর্থ তলায় অবস্থান করায় আমাদেরকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে এর বিচার করতে হবে।’

বিভাগটির সভাপতি সাহিদা আখতার বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যাবধি ল’এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের জন্য কোন কক্ষ বরাদ্দ না থাকায় শ্রেণিকক্ষ, সেমিনার, ল্যান্ড সার্ভে ট্রায়াল কক্ষ, মুটকোর্টসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কক্ষের তীব্র সংকটের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। দীর্ঘদিনের এই ক্ষোভ থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছে। আমরা সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় ফেরানোর চেষ্টা করছি এবং প্রশাসনকেও উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করেছি। আমরা শিক্ষকরা প্রত্যাশা করি, প্রশাসন অতিদ্রুত শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঠিক পরিবেশ সুনিশ্চত করবে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য) অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ভবনটির চতুর্থ তলার কাজ এখনো শেষ হয়নি। কাজ শেষ হলে দ্রুতই বরাদ্দের দিকে আগাবো। সেখানে ডিন অফিস বা এমন কিছুর অনুমোদন এখনো দেওয়া হয়নি। উপাচার্য স্যার ক্যাম্পাসের বাইরে আছেন, তিনি ক্যাম্পাসে এলে আমরা বিষয়টি নিয়ে বসব।’