পশ্চিমবঙ্গে অবিলম্বে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হবে: শুভেন্দু অধিকারী

পশ্চিমবঙ্গে অবিলম্বে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালু হবে: শুভেন্দু অধিকারী

শুভেন্দু অধিকারী

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যে অবিলম্বে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ‘সিএএ’চালু হবে বলে মন্তব্য করেছেন।

গতকাল (শনিবার) বিকেলে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের নবদ্বীপ ব্লক কমিটির উদ্যোগে নবদ্বীপের ভালুকায় মতুয়া-সনাতনী ধর্মীয় মহাজাগরণ মেলায় বক্তব্য রাখার সময়ে তিনি এ সংক্রান্ত মন্তব্য করেন।

বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৯ সালে ঠাকুরনগরে এসে যে কথা দিয়েছিলেন, তা মেনে লোকসভা ও রাজ্যসভায় ‘সিএএ’ গৃহীত হয়েছে। আমরা সকলে প্রত্যাশায় রয়েছি, অপেক্ষায় রয়েছি, আইন তৈরির পর তা কার্যকরের প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে। আমরা আশাবাদী, আর বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। তাই নবদ্বীপের এই সম্মেলন থেকে আওয়াজ তুলব, অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গে সিএএ চালু করা হোক।’

এ প্রসঙ্গে আজ (রোববার) রেডিও তেহরানের শ্রোতা ও বনগাঁ হজ্ব ট্রেনিং সেন্টারের সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা রবিওল হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’ যাকে বলা হয়, এটা মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের আইন। এ নিয়ে বার বার ভোটের আগে উল্লেখ করা হয়। ওরা ক্ষমতায় আছেন, আইন করতে পারেন, করুন। আমাদের কোনও ব্যাপার নেই। আমরা ইতোপূর্বে দেখেছি ভারতের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী জায়গার নাম নিমেষে পরিবর্তন করে দিচ্ছে, সেখানে এত জিগির তোলার কোনও প্রয়োজন নেই।’সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই নির্বাচনে সুবিধা পেতে ‘সিএএ’ কার্যকর করার কথা বলা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন আলহাজ্ব মাওলানা রবিওল হোসেন মণ্ডল।     

বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী নবদ্বীপের সভা থেকে ‘সিএএ’ ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিএএ’র দরকার কীসের? আমরা তো সকলেই নাগরিক। মুখ্যমন্ত্রী ১২ বছর পুলিশমন্ত্রী। আপনি তো চাকরি দিতে পারেননি। কর্মসংস্থান দিতে পারেননি। কোটি কোটি টাকায় চাকরি বেচেছেন। পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে আমাদের মতুয়া বন্ধুদের যখন পেটের টানে বাইরে চাকরির জন্য যেতে হয়, ভিসা, পাসপোর্ট করাতে যেতে হয়, বাংলাদেশে আত্মীয়দের বাড়িতে যেতে হয়, তখন ডিআইবি (ডিরেক্টর অব ইন্টালিজেন্স ব্যুরো) অফিস কেন ’৭১ সালের দলিল চায়?’   

২০১৯ সালের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’ আইনে মুসলিমদের বাদ দিয়ে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও পাকিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিস্টান শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বিতর্কিত ওই আইনের বিধি তৈরি না হওয়ায় তা এখনও কার্যকর হয়নি।

প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা ‘সিএএ’–এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ২৩২টি আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনকারীদের দাবি- তারা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধী নন। কিন্তু ওই আইনে (সিএএ) ধর্মের ভিত্তিতে যে বৈষম্য করা হয়েছে, তারা সেই বৈষম্যের বিরোধী। 

সূত্র: পার্সটুডে