বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাথে এনবিআর এর প্রাক-বাজেট সভা অনুষ্ঠিত

বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাথে এনবিআর এর প্রাক-বাজেট সভা অনুষ্ঠিত

ছবি: প্রতিনিধি

২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় রাজস্ব বাজেট প্রণয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাথে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)কর্মকর্তাদের প্রাক-বাজেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।রবিবার সকাল ১১ টায় আগারগাঁও অবস্থিত জাতীয় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি শ্রী বিজয় কৃষ্ণ দে, সহ-সভাপতি ও রংপুর বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মুজিবুর রহমান, রংপুর বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম দিনার, বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির উপদেষ্টা মুহাম্মদ আব্দুস সবুর, আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী লিমিটেডের প্রতিনিধি মোঃ আলী সাদাত খান মজলিশ ও বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির সমন্বয়কারী বুলবুল আহমেদ। এসময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক ও মূসক উইং এর সদস্য (গ্রেড-১)মোঃ মাসুদ সাদিক,জাকিয়া সুলতানাসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট সভায় বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির পক্ষ থেকে চারটি প্রস্তাব পেশ করা হয়। তাদের প্রস্তাবসমূহ, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিড়িতে শুল্ক ১৮ টাকা হতে নূন্যতম ২ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করা, বিড়ির উপর অগ্রিম আয়কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা,সরেজমিনে পরিদর্শন ব্যতিরেকে বিড়ি ফ্যাক্টরী তৈরির লাইসেন্স দেয়া বন্ধ করা,কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নকল বিড়ি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

বাংলাদেশ বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা জানান, প্রাচীন শিল্প হিসেবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিড়ি শিল্পের অবদান অপরিসীম। বিড়ি শিল্প দেশের প্রাচীন শ্রমঘন কুটির শিল্প।এ শিল্পে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ২০ লক্ষাধিক শ্রমিক জড়িত।বিশেষ করে সমাজের অসহায়, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, শারীরিক বিকলঙ্গতা, নদীভাঙন ও চর এলাকার মানুষ কাজ করে। দেশের প্রান্তিক এলাকায় অন্য কোন শিল্প কারখানা না থাকায় তারা বিড়ি কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধিকার আন্দোলনের পাশাপাশি মেহনতি মানুষের কর্মসংস্থানের স্বার্থে বিড়িশিল্পকে শুল্ক মুক্ত ঘোষণা করেন। কিন্তু বিগত কয়েকটি বাজেটে বিড়িতে মাত্রাতিরিক্ত শুল্ক বৃদ্ধির ফলে শিল্পটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। তাই বিড়ি শিল্প ও এই শিল্পের সাথে জড়িত শ্রমিকদের রক্ষার্থে আগামী বাজেটে বিড়ি শিল্পের উপর আরোপিত শুল্ক কমানোর অনুরোধ করছি।

বিড়ি শিল্প মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা আরো জানান, বিড়ির মূল্য বেশি ধার্য করায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকির মাধ্যমে এক শ্রেণীর নকলবাজরা কমদামে বিড়ি বিক্রি করছে। এতে একদিকে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে আর অন্যদিকে প্রকৃত রাজস্ব প্রদানকারী বিড়ি শিল্প মালিকরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ফলে সরকার প্রতি বছর বিপুল পরিমান রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

এছাড়া ধূমপানের প্রায় ৭৫ শতাংশ বাজার দখল করে আছে সিগারেটের নিম্নস্তর। এই নিম্নস্তর সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকার প্যাকেটের মূল্য ৪০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৫৫ টাকা করলে সরকার আরো বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হবে।ফলে ধূমপানে অনেকে নিরুৎসাহিত হবে এবং প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশ তামাক মুক্ত হবে বলে জানান তারা।