রোজা রাখলে বিচারকদের উদারতা বাড়ে

রোজা রাখলে বিচারকদের উদারতা বাড়ে

রোজা রাখলে বিচারকদের উদারতা বাড়ে

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে বিচারকেরা রোজা রাখেন, তারা রায় দেয়ার সময় একটু বেশি উদার থাকেন। তবে আগের এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছিল, ক্ষুধা থাকা অবস্থায় বিচারকেরা একটু কঠোর রায় দেন।২০১১ সালের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, ইসরাইল বিচারকদের অপরাধীদের প্যারোল দেয়ার সম্ভাবনা দুপুরের খাবারের পরের চেয়ে আগে বেশি। ওই গবেষণাটি ‘দ্য হাংগ্রি জাজ ইফেক্ট’ নামে পরিচিতি পেয়েছিল।

নতুন গবেষণার প্রধান লেখক রাশিয়ার নিউ ইকোনমিক স্কুলের সুলতান মেহমুদ বলেছেন, তিনি রোজার সময় বিচারকরা কী করেন, তা দেখতে আগ্রহী ছিলেন।গবেষণার জন্য মেহমুদ ও আরো দু’জন অর্থনীতির গবেষক ভারত ও পাকিস্তানের গত ৫০ বছরের রায় পর্যালোচনা করেছেন। তারা প্রায় পাঁচ লাখ মামলার তথ্য ও প্রায় ১০ হাজার বিচারকের কাজ পর্যালোচনা করেন।

মেহমুদ বলেন, তারা ‘দ্য হাংগ্রি জাজ ইফেক্ট’ গবেষণার ফলাফলে বিপরীত দেখে ‘অবাক’ হয়েছেন। কারণ, গবেষণায় দেখা গেছে, রোজার সময় মুসলিম বিচারকদের কাছ থেকে অপরাধীদের ছাড়া পাওয়ার সংখ্যা অনেক বেড়ে যেত। কিন্তু অমুসলিম বিচারকদের ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি বলে গবেষণায় পাওয়া গেছে। গবেষণাটি ‘নেচার হিউম্যান বিহেভিয়ার’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

মেহমুদ বলেন, মুসলিম বিচারকেরা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় রোজার মাসে গড়ে প্রায় ৪০ ভাগ বেশি মুক্তির রায় দিয়েছেন।বিচারকেরা যত বেশি সময় খাবার ও পানি ছাড়া থেকেছেন, তত বেশি উদার রায় দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। প্রতি এক ঘণ্টা বেশি সময় রোজা রাখায় মুক্তি দেয়ার সম্ভাবনা ১০ ভাগ বেড়ে গিয়েছিল বলে গবেষণায় জানা গেছে।

গবেষণার আরেক লেখক ফ্রান্সের এক্স মার্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ আভনের সেরর মনে করেন, ইসলাম ধর্মে ক্ষমা করার যে বিষয়টি আছে, তা হয়ত রোজার মাসে বিচারকদের মনে রায় দেয়ার সময় প্রভাব ফেলে।মেহমুদ বলেন, গবেষণার প্রয়োজনে তিনি পাকিস্তানের যত বিচারকের সাথে কথা বলেছেন তারা তাকে জানিয়েছেন, রোজার সময় তারা ‘অনেক বেশি উদার’ থাকেন।

সূত্র : ডয়চে ভেলে।