যবিপ্রবির হলে আটকে নির্যাতনে ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

যবিপ্রবির হলে আটকে নির্যাতনে ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

ফাইল ছবি

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে হল প্রশাসন।

সোমবার (৩ এপ্রিল) সকালে যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোববার (২ এপ্রিল) রাত ১০টায় প্রভোস্ট বডির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হলের একজন অনাবাসিক ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে দুজনকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।


বহিষ্কৃতরা হলেন ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সিএসই বিভাগের মোহাম্মদ শোয়েব আলী এবং একই শিক্ষাবর্ষের ও একই বিভাগের ছাত্র মো. সালমান এম রহমান। সালমান মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে থাকেন।


নির্যাতনের শিকার ইসমাইল হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড টেকনোলজি (এনএফটি) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের অনাবাসিক ছাত্র।

 

এর আগে রোববার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। সহপাঠীদের দাবি, ৫ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে ওই শিক্ষার্থীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ইসমাইলকে উদ্ধার করা হলেও রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুরুতর অবস্থায় তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


ইসমাইলের সহপাঠীরা জানান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সালমান এম রহমান ও মো. শোয়েব নামে দুই শিক্ষার্থী দুপুর ২টার দিকে ইসমাইলকে ডেকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮নং রুমে নিয়ে যান। এরপর ২টা থেকে ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত স্টাম্প দিয়ে দফায় দফায় তাকে মারধর করা হয়। তবে হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জেনে গেলে কয়েকজন গিয়ে ইসমাইলকে উদ্ধার করেন। এ সময় উদ্ধারকারীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাতেও বাধা দেন নির্যাতনকারীরা।



পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় অচেতন অবস্থায় ইসমাইলকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইসমাইলের সহপাঠীদের দাবি, পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। তবে কী কারণে চাঁদা দাবি করা হয়েছে, তা তারা জানাতে পারেননি।


যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হাসিবুর রহমান জানান, ইসমাইলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে সেগুলো দেখার পরে পরবর্তী চিকিৎসা দেয়া হবে। তবে তিনি শংকামুক্ত।


এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনা জানার পর আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি মশিউর রহমানের হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষ সিলগালা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই কক্ষের শিক্ষার্থীদের সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
 

তিনি বলেন, নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী অভিযোগ দিলে মামলা করতে সহায়তা করা হবে এবং অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে।