টেস্ট ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ড যে কারণে ‘ভয়ংকর প্রতিপক্ষ’ হয়ে উঠতে পারে

টেস্ট ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ড যে কারণে ‘ভয়ংকর প্রতিপক্ষ’ হয়ে উঠতে পারে

টেস্ট ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ড যে কারণে ‘ভয়ংকর প্রতিপক্ষ’ হয়ে উঠতে পারে

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটের সিরিজের একমাত্র টেস্ট ম্যাচ খেলতে মঙ্গলবার মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ সফরের শেষ ম্যাচ এটি। ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে এই টেস্ট ম্যাচ।বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচক আব্দুল রাজ্জাক বলেছেন, এই ম্যাচে ‘দাপট দেখিয়ে’ জিততে চায় বাংলাদেশ।

কিন্তু আয়ারল্যান্ডও প্রতিপক্ষ হিসেবে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে, এমন শংকাও রয়েছে সাবেক এই ক্রিকেটারের মনে।বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সোমবার বলেছেন, “বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে তিন মাস পরে টেস্ট ক্রিকেট খেলবে। অনেক দিন একসাথে খেলা হয়নি।”তিনি মনে করেন, ‘বাংলাদেশ দলের সমন্বয় এখনও পর্যন্ত ভালো আছে’।

হোম কন্ডিশনের কথা বলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, কিন্তু এই উইকেটে ফাস্ট বোলারদের জন্যও সুবিধা থাকবে বলে মনে করেন মিরাজ।তাই যদি হয় তবে বাংলাদেশের জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করছে।আয়ারল্যান্ড প্রতিপক্ষ হিসেবে দুর্বোধ্য, কারণ এই দলটার বিপক্ষে বাংলাদেশ কখনো টেস্ট ম্যাচ খেলেনি এবং আইরিশরা অচেনা প্রতিপক্ষকে কঠিন সময় দিতে অভ্যস্ত।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৯ সালে আয়ারল্যান্ড লর্ডসে একটি টেস্টে চমক দেখিয়েছিল।জো রুটের দলকে সেবার আইরিশ পেসাররা ৮৫ রানে অলরাউট করে দিয়েছিল।সেই দলের মার্ক অ্যাডেইর মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিপক্ষে স্কোয়াডেও আছেন।এই টেস্টে আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দলের ফাস্ট বোলারদের কাউন্টি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা কাজে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এমনিতে ১০০টিরও বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলা বাংলাদেশ এবং মাত্র তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলা আয়ারল্যান্ডের মধ্যে পরিসংখ্যান দিয়ে তুলনা করাটা কঠিন হয়ে যাবে।আয়ারল্যান্ড এখনও পর্যন্ত যে তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে গত পাঁচ বছরে তার সবকটিতেই হেরেছে দলটি।দুই হাজার সতেরো সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া এই দলটির অনেক ক্রিকেটারের জন্য টেস্ট ক্রিকেট খেলাই স্বপ্নের ব্যাপার।বাংলাদেশের বিপক্ষে এই ম্যাচটিকে তারা সুযোগ হিসেবেই দেখবেন।

যেমনটা দেখেছিল আফগানিস্তান, ২০১৯ সালে বাংলাদেশের ঘরের মাটিতে খেলা একমাত্র টেস্ট ম্যাচে আফগানিস্তান জয় পেয়েছিল।এসব কারণেই মেহেদী হাসান মিরাজ আয়ারল্যান্ডকে টেস্ট ক্রিকেটে হালকাভাবে দেখতে নারাজ।তিনি মনে করেন, টেস্ট ক্রিকেটে যে কোনও কিছুই হতে পারে।

বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলবে বলে জানিয়েছেন মিরাজ।তিনি বলেন, “আধুনিক ক্রিকেটে সবখানেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। আমরাও চেষ্টা করবো, যেহেতু লাল বলে আসবো, ছোট ছোট পরিবর্তনে পরিবর্তন আসবে।দিনশেষে রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ, উইকেট পাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।”এ কারণে বাংলাদেশ পূর্ণশক্তির দল নিয়েই মাঠে নামছে এই টেস্টে।

এদিকে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ডাক পাওয়া সাকিব আল হাসান এবং লিটন দাস যথাক্রমে বাংলাদেশের টেস্ট ফরম্যাটের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক।এ দুজনই আগামীকাল বাংলাদেশের হয়ে মাঠে নামবেন, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ না খেলে আইপিএলে যাওয়ার অনাপত্তিপত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাদের দেয়নি।একটি পণ্যের প্রচারণা অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসান বলেছেন, এটা তিনি আগে থেকেই জানতেন এবং তার আইপিএল দলও জানে।

“আমাদের এই সময়ে টেস্ট ম্যাচ আছে এটা শুরু থেকেই জানে আইপিএলের দলগুলো এবং সেভাবেই তাদের সাথে কথা হয়েছে, এই সময় এনওসি (অনাপত্তিপত্র) না পাওয়াই স্বাভাবিক”, বলেন সাকিব।বাংলাদেশের বিপক্ষে সীমিত ওভারের দুটি সিরিজেই হেরেছে আয়ারল্যান্ড।কিন্তু শেষ টি-টোয়েন্টিতে সাত উইকেটের বড় জয় পেয়ে এখন আত্মবিশ্বাসী আয়ারল্যান্ড স্কোয়াড।

আইরিশ টেস্ট অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি আয়ারল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটে অনভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, প্রায় ২ বছর আগে শেষ চারদিনের ম্যাচ খেলেছেন তিনি।কাউন্টি ক্রিকেটে গ্ল্যামরগান ও মিডলসেক্সের হয়ে খেলা এই ব্যাটসম্যান তিন টেস্টে ১৪৬ রান তুলেছেন, দুটি অর্ধশতক আছে তার।বালবার্নি ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, “টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে পেরেই আয়ারল্যান্ড উজ্জীবিত।”

“আমাদের এখানে হারানোর তেমন কিছু নেই। তাই আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলার চেষ্টা করবো”, বলেন আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক।করোনাভাইরাস আসার পর থেকেই আয়ারল্যান্ড পুরোপুরি সাদা বলের ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেছে, টেস্ট ক্রিকেটে খেলেনি একদমই।বালবার্নি মনে করেন, যদি আয়ারল্যান্ড চার থেকে পাঁচটি টেস্ট ম্যাচও খেলতে পারে তাহলে একটা জায়গায় যেতে পারবে তারা।

সূত্র : বিবিসি