‘বঙ্গবাজার মার্কেটের দুর্ঘটনা এড়াতে ১০ বার নোটিশ দিয়েছিলাম’

‘বঙ্গবাজার মার্কেটের দুর্ঘটনা এড়াতে ১০ বার নোটিশ দিয়েছিলাম’

‘বঙ্গবাজার মার্কেটের দুর্ঘটনা এড়াতে ১০ বার নোটিশ দিয়েছিলাম’

রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেট যে বেশ ঝুঁকিতে আছে, তা জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে ১০ বার নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। তবে কোনো কিছুতেই সতর্ক হননি ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা।মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের প্রবেশ গেটে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: মাইন উদ্দিন।

২০১৯ সালের একটি পত্রিকার একটি সংবাদের কাটিং সাংবাদিকদের দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে বঙ্গমার্কেটটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে। এছাড়া আমরা ব্যানার টানিয়ে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ১০ বার নোটিশ দিয়েছি। আমাদের করণীয় যা যা ছিল সব করেছি। তারপরেও এখানে ব্যবসা চলছে।’আপনারা ১০ বার নোটিশ দিয়েছেন কিন্তু ব্যবসা কেন বন্ধ হলো না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করুন।’

নিজের মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও দেখিয়ে সাংবাদিকদের ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, ‘এখানকার উৎসুক জনতার ভিড়ে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এখানে এতো পারিমাণ ভিড় ছিল যে, কোনো জায়গায় গিয়ে আমাদের সদস্যরা কাজ করবেন সেই জায়গাটিও ছিল না।‘দ্বিতীয় সমস্যাটি ছিল পানির স্বল্পতা ও তৃতীয় সমস্যাটি হলো বাতাস। বাতাসের কারণে এক জায়গার আগুন আরেক জায়গায় চলে যায়।’

বঙ্গবাজারে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুনের খবর পেয়ে ৬টা ১২ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। একে একে যোগ দেয় ৪৮টি ইউনিট।ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বেলা ১২টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, বঙ্গবাজার মার্কেটে আড়াই হাজারসহ আশপাশের মার্কেটে আগুনে প্রায় ৫ হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আনুমানিক দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ আগুন জ্বলতে দেখেন তারা। খবর পেয়ে দ্রুতই পাশ থেকে উদ্ধারে অংশ নিতে আসে ফায়ার সার্ভিস। এরপর অল্প সময়েই বাড়তে থাকে বাহিনীর ইউনিটের সংখ্যা।

এক পর্যায়ে পানির সংকটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা এলাকা থেকে বহন করে নেয়া হয় পানি। হাতিরঝিল থেকেও হেলিকপ্টারে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা যায়। বাতাসে আশপাশের ভবনে চলে যায় আগুন।আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট। পাশের এনেক্সকো টাওয়ার ও আরো কয়েকটি ভবনও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ওই এলাকায় সড়ক বন্ধ করে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় র‌্যাব। তবে এতসবের মধ্যেও উৎসুক জনতার ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো। এতেও বিঘ্ন ঘটেছে উদ্ধার তৎপরতা।ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ কর্মীসহ ১২ জনের মতো আগুনের ঘটনায় অসুস্থ হয়ে হাসপতালে আসেন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।