তিন মাস বেতন পান না এফডিসির ২২৩ কর্মচারী

তিন মাস বেতন পান না এফডিসির ২২৩ কর্মচারী

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) সোনালী দিন হারিয়ে গেছে অনেক আগেই। লাইট-ক্যামেরার ব্যস্ততায় যাদের দিন-রাত এক হয়ে যেত, তারা এখন অলস সময় কাটাচ্ছেন। প্রডাকশন কমে যাওয়ায় কমেছে প্রতিষ্ঠানটির আয়।

ধুঁকে চলা বিএফডিসির বর্তমান অবস্থা খুবই শোচনীয়। তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না প্রতিষ্ঠানটির ২২৩ কর্মচারী। অর্থাভাবে একপ্রকার মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা।

৩৫ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি করা শরীফা বেগম বলেন, ‘বেতন পাই না চার মাস। চাকরি করি বলে ছেলে মেয়েরাও টাকা দেয় না। এখন খুবই কষ্টে জীবনযাপন করছি। সেহরিতে শুধু পানি-ভাত খেয়ে রোজা রাখছি, ইফতারে একটা খেজুর কেনারও সামর্থ নেই। শুধু পানি দিয়ে ইফতার করি।’
বকেয়া আদায়ে গেল জানুয়ারিতে এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন কলাকুশলী ও কর্মচারী লীগ। চিঠিতে বলা হয়েছিল, সুচিন্তিত পরিকল্পনার অভাব এবং এফডিসিতে চলচ্চিত্র নির্মাণের হার কমে যাওয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ন্যায্য পাওনা আদায়ে আবারও সরব এফডিসির কলাকুশলী ও কর্মচারী লীগ। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সকালে এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাত করেন সংগঠনটির নেতারা।

স্মারকলিপি দিয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব বলেন, ‘এ চাকরিটাই একমাত্র অবলম্বন। বেতন না পাওয়ার কারণে আমরা একটি খেজুর, সেহরি ব্যবস্থা করতে পারি না। ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেছেন, আমরা আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু গত দুই তারিখে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি আসছে, সেটিতে টাকা দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। এমডি তদবির করছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে কিছু পাওয়া যাবে।’

বকেয়া আদায়ে এফডিসির ব্যবস্থাপনার পরিচালকের ভূমিকা কী? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল নুজহাত ইয়াসমিনের সঙ্গে। বরাবরের মতোই সংবাদমাধ্যমকে এড়িয়ে গেলেন তিনি।

১৯৫৯ সালের পর থেকে এফডিসিতে চলচ্চিত্র নির্মাণ হতে থাকে। লাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি লোকসানের মুখে পড়ে ২০০৬ সালের পর। ২০১৫ সালে পর থেকে কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে পুরোপুরি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুদানের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এফডিসি।